Author: কালি পদ
৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর: পঁচাত্তরের ঐতিহাসিক ঘটনা ও শারমিন আহমদের দৃষ্টিকোণ ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। এই দিনটি জাতীয় চার নেতা—তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এবং এএইচএম কামারুজ্জামান—কে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ভয়াবহ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এবং এর পেছনের ঘটনাবলী নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদের রচিত বইয়ে “৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর”। ৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে ৩ নভেম্বরের ঘটনা, এর পূর্বাপর প্রেক্ষাপট এবং জাতীয় চার নেতার জীবন ও কর্মের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। শারমিন আহমদ একজন…
একাত্তরের দিনগুলি বইটির কথা ১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সঙ্গে জাহানারা ইমাম একাত্মতা ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মৃত্যু, দুঃস্বপ্নভরা বিভীষিকার মধ্যে তার ত্যাগ ও সতর্ক সক্রিয়তা দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ হয়ে আছে। শহীদ রুমীর মা পরিণত হন শহীদ জননীতে। মুক্তিযুদ্ধে সন্তান বিয়োগের বেদনাবিধুর মাতৃহৃদয় এবং যাতনা মূর্ত হয়েছে তাঁকে কেন্দ্র করে। গত শতকের নব্বই দশকে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির উত্থানে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় তার পটভূমিতে ১৯ জানুয়ারি ১৯৯২ সালে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ গঠিত হলে তিনি আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবিতে দেশব্যাপী ব্যাপক গণআন্দোলন পরিচালনা করেন। তারই নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে…
যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি “যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি” হলো কর্নেল (অবঃ) শরিফুল হক ডালিম (মেজর ডালিম) এর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। এই বইটিতে তিনি তার জীবন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। পাকিস্তান: রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলেও ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি করে, যেটি যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। ক্ষমতা…
রাইফেল রোটি আওরাত বইয়ের ভূমিকা: “রাইফেল রোটি আওরাত” বইটি শহীদ আনোয়ার পাশার রচিত এক অমর কাহিনী। বাঙালির সুদীর্ঘ ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এক উজ্জ্বল অধ্যায়, যেখানে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ অসাধারণ লড়াই করেছে। এই লড়াই বাঙালির ঐতিহ্য, বর্তমানের গৌরব এবং ভবিষ্যতের প্রেরণা হয়ে আছে। আজ আমরা যেন সেই সংগ্রামের মহত্ত্ব ভুলতে বসেছি। এই বিস্মৃতির পেছনে রয়েছে লড়াইয়ের লক্ষ্য পূরণে আমাদের ব্যর্থতা। কিন্তু, ব্যর্থতা কোন জাতির চিরকালের সত্য ইতিহাস হতে পারে না। “রাইফেল রোটি আওরাত” উপন্যাসের মাধ্যমে আনোয়ার পাশা সেই সংগ্রামের মহান ত্যাগ এবং নিষ্ঠাকে স্মরণ করিয়ে দেন। উপন্যাসটি পাঠকদের চেতনাকে উজ্জীবিত করে, আমাদের চিত্তের পবিত্রতা রক্ষায় অবদান…
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে আপনাকে স্বাগতম! যদি আপনি একজন পলিটিক্যাল এক্টিভিস্ট, হিউম্যান রাইটস এক্টিভিস্ট, জার্নালিস্ট, অথবা সচেতন নাগরিক হন, এবং স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সঠিক ও কংক্রিট জ্ঞান অর্জন করতে চান, তবে পিনাকী ভট্টাচার্যের লেখা “স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ” বইটি আপনার জন্যই লেখা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের ইতিহাস ও সামাজিক পরিবর্তন নিয়ে রচিত এই বইটি অসাধারণ। “স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ” পাঠকদের জন্য সেই সময়ের ঘটনা, চ্যালেঞ্জ ও অর্জনের কাহিনী তুলে ধরে। বইটি পড়ার সময় মনে হয়, যেন আমরা সেই সময়ের বাংলাদেশে উপস্থিত আছি। প্রতিটি অধ্যায় গভীর গবেষণা ও ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে রচিত, যা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। এই বইয়ের মাধ্যমে পিনাকী ভট্টাচার্য আমাদের সামনে…
তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রধান নেতা। তাঁর জীবন ও কাজের ওপর ভিত্তি করে তাঁর কন্যা শারমিন আহমদ একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাজউদ্দীন আহমদ ও সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের জ্যেষ্ঠ কন্যা শারমিন আহমদের জন্ম ঢাকায়। ১৯৮৪ সাল থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী। তিনি ১৯৯০ সালে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেলোশিপ ও উইমেন্স স্টাডিজ স্কলারস অ্যাওয়ার্ডসহ উইমেন্স স্টাডিজে মাস্টার অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি শিশু শিক্ষার ওপরেও মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করেন। শারমিন আহমদ একজন প্রখ্যাত লেখক ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত। বিশ্বের পেশাজীবী নারীদের অন্যতম…
তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা ‘তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা’ বইটির ভূমিকাঃ ১৯৭৫ সালে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সংগঠিত হয়েছিল তিনটি যুগান্তকারী সেনা অভ্যুত্থান। এই সেনা অভ্যুত্থানগুলো দেশের রাজনৈতিক এবং সামরিক ইতিহাসে অতি গুরুত্বপূর্ণ, যার ফলে ঘটে যায় ব্যাপক পরিবর্তন, এমনকি সরকার পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটে। এই বইয়ে লেখক লে. কর্ণেল (অব:) এম এ হামিদ পিএসসি, তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে এই ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানগুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। অভ্যুত্থানগুলো নিয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা লে. কর্ণেল (অব:) এম এ হামিদ পিএসসি ছিলেন ঢাকার স্টেশন কমান্ডার। তার এই পদে থাকার সুবাদে তিনি খুব কাছ থেকে ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও…
দেয়াল – হুমায়ূন আহমেদের শেষ উপন্যাসের বিশ্লেষণ ভাদ্র মাসের সন্ধ্যায়, আকাশে লালচে রঙের মেঘ, যা কখনও বৃষ্টি নিয়ে আসে না তবে দেখায় অপূর্ব। এভাবেই সূচনা হয় হুমায়ূন আহমেদের চমকপ্রদ উপন্যাস “দেয়াল”। লেখক, যার প্রতিটি সৃষ্টি পাঠকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে, এই উপন্যাসে স্বাধীনতার পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরেছেন। ২০১১ সালের মাঝামাঝিতে উপন্যাসটি রচনা শুরু করেন। উপন্যাসটি প্রথমে পাঁচটি পর্বে “অন্যদিন” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর লেখকের ক্যান্সার চিকিৎসা চলাকালে উপন্যাসটির চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সম্পূর্ণ করতে পারেননি। এক সদ্যস্বাধীন জাতির টানাপোড়েনের গল্প উপন্যাসের সূচনা-অনুচ্ছেদে আকাশের রঙ পরিবর্তনের সিদ্ধান্তহীনতা যেন দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে প্রতিফলিত করে। কিছু চরিত্র বাস্তব…
জোছনা ও জননীর গল্প: হুমায়ূন আহমেদের কালজয়ী উপন্যাস জোছনা ও জননীর গল্প একটি অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে রচিত। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলী এবং নিজের জীবন থেকে নেওয়া বাস্তব অভিজ্ঞতা এ উপন্যাসে গভীরভাবে ফুটে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তৎকালীন কিছু উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ঘটনা তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছেন হুমায়ূন আহমেদ, যা পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে। উপন্যাসের শুরুর লাইন থেকেই পাঠকদের এক অন্যরকম যাত্রায় নিয়ে যান। এখানে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য যে অসীম ত্যাগ এবং সংগ্রাম তা অত্যন্ত প্রাঞ্জলভাবে বর্ণিত হয়েছে। একজন কিংবদন্তি সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় চরিত্র রচিত “জোছনা ও জননীর গল্প” সহ…
জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি – মহিউদ্দিন আহমদ সত্য গল্পের চেয়েও রোমাঞ্চকর—মার্ক টোয়েনের এই বিখ্যাত উক্তিটি বাংলাদেশের রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে খুবই প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে জাসদের উত্থান পতনকে কেন্দ্র করে যে অস্থির সময়ের রাজনীতি গড়ে উঠেছিল, তা আজও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই ভূখণ্ডের সাম্প্রতিক ইতিহাসের প্রধান মাইলফলক মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধ দেশের মানুষকে আমূল বদলে দিয়েছে, নড়বড়ে করে দিয়েছে এ অঞ্চলের সামাজিক বুনন ও রাজনীতির চালচিত্র। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা ও অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে দিয়েছে রাজনীতির ব্যাকরণ। বলা চলে, একরকম শূন্যতার মধ্যেই জন্ম নিয়েছে প্রতিবাদের অন্য একধরনের প্রবণতা, যার সংগঠিত রূপ হচ্ছে জাসদ নামের একটি রাজনৈতিক…