নজরুলের রচনাবলী (২য় খন্ড) – কাজী নজরুল ইসলাম
‘নজরুলের রচনাবলী’র বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রস্তুত করা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়ায়। বাংলা একাডেমী ২০০৫ সালে নজরুল জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। নজরুল-বিশেষজ্ঞ ও ভাষাবিদদের নিয়ে গঠিত একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সম্পাদনা পরিষদ নজরুলের অপ্রকাশিত রচনা, বাদপড়া অংশ সংযোজন, এবং নতুনভাবে আবিষ্কৃত অংশসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে নজরুল-রচনাবলী’র প্রামাণ্য সংস্করণ প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ করছে।
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯ সালের ২৪ মে – ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গীতিকার, নাট্যকার, অভিনয়শিল্পী, এবং সুরকার। নজরুলের জীবন ছিলো বৈচিত্র্যময়; বাল্যকালে তিনি “দুখু মিয়া” নামে পরিচিত ছিলেন। গ্রামের মক্তবে শিক্ষাজীবনের শুরু হলেও, পিতৃহীন হওয়ার পর নজরুল লেটোর দলে যোগ দেন এবং সেখানে কবিতা ও গান লেখার কৌশল আয়ত্ত করেন। পরবর্তীতে, চুরুলিয়ার রানীগঞ্জের শিয়ারসোল রাজ স্কুলে তিন বছর পড়ালেখার পর তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
সৈনিকজীবনের অন্যতম স্মরণীয় সময় ছিলো করাচিতে অবস্থানকালে। তখনই নজরুলের সাহিত্য প্রতিভা প্রকাশ পায় ‘বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনী’ গল্পের মাধ্যমে। তার সাহিত্যকর্মে সমকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অসন্তোষের প্রতিচ্ছবি এবং সাম্যবাদের চেতনা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
নজরুলের রচনাবলী বাংলা সাহিত্যের রাবীন্দ্রিক যুগে জন্ম নিলেও তার কাজ ছিলো স্বতন্ত্র। উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো ‘রিক্তের বেদন’, ‘দোলনচাঁপা’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘সাম্যবাদী’, ‘সর্বহারা’, এবং ‘প্রলয়শিখা’। তার সাহিত্যকর্ম এবং সম্পাদিত পত্রিকা যেমন ‘সাপ্তাহিক লাঙল’ এবং ‘ধূমকেতু’ তাকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ১৯৭৬ সালে ঢাকায় মৃত্যু হলেও তার সাহিত্য কর্ম ও সংগীত এখনো বাংলার মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছে।