আমিই খালেদ মোশার্রফ – মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস
আমার পিতৃ প্রদত্ত নাম খালেদ মোশার্রফ। ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে আমার জন্ম জামালপুর মোশাররফগঞ্জ গ্রামে। পিতার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা জমিলা আখতার।
আমি কিংবদন্তীতে বিশ্বাসী নই। তবে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একজন অংশীদার হতে পেরে আমি গর্বিত। সেই গৌরবজ্জল ইতিহাসের একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিজয় হলো পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয়। ১৯৭১ সালে আমি মুজিবনগরের নির্বাসিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অধীনে ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এবং ‘কে’ ফোর্সের প্রধান ছিলাম।
আমিই খালেদ মোশার্রফ – বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার ইতিহাস
আমার এই জবানবন্দি শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটুখানি অংশ। ২৫শে মার্চ, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আকস্মিকভাবে বাংলাদেশে গণহত্যায় লিপ্ত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার আহ্বানে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
আমরা, যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ছিলাম, সেই চাকরির পরোয়া না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিই। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরের মধ্যে ২ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব ছিল আমার। আমাদের প্রধান সেনাপতি ছিলেন এম এ ডি ওসমানী।
আমিই খালেদ মোশার্রফ – মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথা
১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত সশস্ত্ৰ প্রতিরোধ সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা পাকিস্তানি বাহিনীকে রুখে দাঁড়াই। তারপর শুরু হয় প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধ। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ী হন।
এম আর আখতার মুকুল – মুক্তিযুদ্ধের সাংবাদিক ও লেখক
এম আর আখতার মুকুল (জন্ম: ৯ আগস্ট ১৯৩০, মৃত্যু: ২৬ জুন ২০০৪) ছিলেন একজন বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা এবং সাংবাদিক। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের চরমপত্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন। তাঁর লেখা ৩৫টি গ্রন্থ মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়ের অংশ।
মুক্তিযুদ্ধে এবং সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি ২০০১ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। সাংবাদিকতা জীবনে তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রচার দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এম আর আখতার মুকুলের অবদান
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাঁর পরিচালিত চরমপত্র অনুষ্ঠানটি মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৭ সালে অবসর গ্রহণ করেন। এম আর আখতার মুকুল ছিলেন জাতীয় ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি সাংবাদিকতা এবং মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন।