ঝিনুক আর দারালো না ফোনটা হাতে নিয়ে খোলা চুলে বেরিয়ে গেল রুম থেকে ৷ নিচে নামতে নামতে ভাবতে লাগলো দরজা তো খোলা ছিলো না তাহলে দরজা কি করে খুলে গেল? আর ফোন শাড়ি এগুলো কখন সাইকোটা নিয়ে আসলো? ভাবতে ভাবতে মেইন দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখে সমুদ্র অলরেডি এসে পরেছে৷ ব্লাক শার্ট ডেমিন প্যান্ট , শার্টের হাতা গোটানো৷ হাতে কালো মোটা চামড়ার দামী ঘড়ি সবুজ চোখ জোড়া সানগ্লাস দিয়ে ঢেকে রাখা , পায়ে শু৷ জেল দিয়ে চুল গুলো সেট করা তবুও কপালে ছোট ছোট চুল গুলো ছড়িয়ে আছে৷ কাপালে দুটো ভাজ পড়ে আছে ৷ সমুদ্রের থুতুনিতে গাঢ় কালো তিল ৷ ক্লিন সেভ করায় আজ ঝিনুকের চোখে পড়লো ৷ এই তিল টার জন্য আজ প্রচন্ড লেভেলের হ্যান্ডসাম লাগছে সমুদ্রকে এটা ঝিনুকের বুজতে এক সেকেন্ডও লাগলো না৷ দ্রুত চোখ জোড়া সরিয়ে নিলো ৷
এদিকে ঝিনুককে আসতে সমুদ্রের হার্টবিট যেন হাজার গুন স্পিডে বেড়ে গেছে৷ মনে হচ্ছে এখুনি বেরিয়ে আসবে শরীল থেকে৷ কালো শাড়িতে ঝিনুককে মনে হচ্ছে সদ্য আকাশ থেকে নেমে আসা ব্লাক এন্জেল৷ কোমড় অব্দি ছড়ানো কোকড়ানো চুল বাতাসে এলোমেলো হয়ে দুলছে ৷ কপালে কালো টিপ চোখে গাঢ় কাজল ঠোটে লিপস্টিক কানে ঝুমকো হাতে মুঠো ভর্তি কাঁচের চুড়ি ব্যাস এতোটুকুতে ঝিনুকের উপর থেকে চোখ সরানো না ভিষন কঠিন হয়ে পড়ছে সমুদ্রের ৷ সমুদ্র ঝিনুককে যতো বার দেখছে ঠিক ততোবার ঝিনুকের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে ৷
ঝিনুক ঠোটের কোনে জোড় করে প্লাস্টিক হাসি ঝুলিয়ে সমুদ্রের সামনে দারায় ৷ সমুদ্রের চোখে সানগ্লাস থাকায় ঝিনুক বুজতে পারছে না সমুদ্র আসলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে নাকি অন্য দিকে ! পাচঁ মিনিট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ঝিনুক এক প্রকার রেগে গিয়ে সমুদ্রের চোখ থেকে সানগ্লাস টা খুলে ফেলে তখনি সমুদ্রের ধ্যান ভাঙে…
“” দেখা শেষ হয়েছে নাকি এখানে দারিয়ে আরো কিছুক্ষন দেখবেন?””
সমুদ্র মুচকি হেসে গাড়ির দরজা খুলে দেয়৷ ঝিনুক কোন কথা না বারিয়ে ফ্রন্ট সিটে বসে পড়ে৷ সমুদ্র গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ঝিনুকের ডান হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়৷ ঝিনুক খুব ভালো করে জানে এই হাত সে নিজে থেকে ছাড়াতে পারবে না৷ তাই আর কোন চেষ্টা করলো না ৷ কিছুক্ষন পর সমুদ্র চোখের পড়া সানগ্লাসের আড়ালে ঝিনুককে দেখছে ৷ ঝিনুকের তাতে বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই বিধায় বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ সমুদ্র হুট করে ঝিনুককের হাত টেনে নিয়ে নিজের কোলের উপর বসিয়ে নেয়৷ ঝিনুক ভয় পেয়ে সমুদ্রের গলা জরিয়ে ধরে বলল
“” কি করছেন সমুদ্র? আমাকে কেন কোলে বসালেন? গাড়ি চালাতে অসুবিধা হবে আর তার চেয়ে বড় কথা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে তাই প্লিজ আমাকে সিটে বসতে দিন৷”
সমুদ্র গাড়ি চালাতে চালাতে ঝিনুকের গালে টুক করে একটা চুমু দিয়ে বলল” প্রিন্সেস তোমার হাসবেন্ট গাড়ি খুব ভালো চালাতে পারে তাই এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷ “
অগ্যতা ঝিনুক চুপ হয়ে গেল আর কোন কথা বললো না আর না সমুদ্র বললো তবে গাড়ি চালানোর সময় সমুদ্র একমিনিট পর পর ঝিনুকের গাল দুটোতে চুমু দিয়েছে ৷ যেটা প্রচন্ড বিরক্ত লেগেছে ঝিনুকের তবুও চুপ থেকেছে কারন এতো গুলো দিনে এক বিছানায় থেকেও সমুদ্র একবারও ইন্টিমেন্ট হওয়ার জন্য জোর করেনি তবে তার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে হয়েছে তাকে৷
ত্রিশ মিনিট পর সমুদ্রের গাড়ি একটা বাড়ির সামনে এসে থামে ৷ সমুদ্র ঝিনুককে কোলে নিয়ে গাড়ি থেকে নামে ৷ ঝিনুক বাড়িটার চারদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়৷ কারন এমন বাড়ি ঢাকা শহরে থাকতে পারে বলে ওর জানা ছিলো না ৷ তবে বাড়িটা শহর থেকে কিছুটা দুরে ৷ চারিদিকে সবুজ গাছ বাড়িটার সামনে বিশাল গার্ডেন তার একপাশে সুইমিংপুল পাশে বসার জন্য রাজকীয় চেয়ার টেবিল ৷ ঝিনুকের সব থেকে বেশি ভালো লাগছে ফুল গাছ দেখে নানা রকমের ফুলের গাছ এখানে ৷ সমুদ্র তার প্রিন্সেসের চোখে মুখে বিস্ময় দেখে ভিষন আনন্দ পাচ্ছে ৷
সমুদ্র ঝিনুককে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে ঝিনুক আর একদফা অবাকে কিংকতব্যবিমুঢ় ৷ সমুদ্ররা যে বাড়িতে থাকে তার থেকে ও সুন্দর এই বাড়িটা ৷ এবাড়ির প্রত্যেকটা জিনিস অসম্ভব সুন্দর সব কিছুতেই রাজকীয় রাজকীয় ভাব৷ দেয়াল জুর টিভি ৷ অন্য পাশে কাচেঁর দেয়াল তা ওপাশে নীল পানি ভিতর টা স্পষ্ট দেখা না গেলেও পানির ভিতর খনে খনে কি যেন লাফাচ্ছে৷ ঝিনুক সেদিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকাতে সমুদ্র বলে উঠলো ” এগুলো পড়েও দেখতে পারবে কারন বাড়িটা আমাদের…”
সমুদ্রের কথা শুনে ঝিনুক যেন আকাশ থেকে পড়লো ৷
” কিহ! বাড়িটা আমাদের মানে?”
” মানে হলো তোমার হাসবেন্ট বাড়িটা বানিয়েছে তার প্রিন্সেসের জন্য..”
” তার মানে কি ? কেন ?”
” জানতে পারবে জান উপরে চলো “
সূর্যের ডুবু ডুবু অবস্তা আকাশে চাঁদ থাকায় চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার আর থাকলো না চাঁদের আলোয় বেশ চারিদিকটা ঝলমল করছে ৷ সমুদ্র ঝিনুককে সেভাবে কোলে নিয়ে ছাঁদে চলে আসে ৷ ঝিনুকের অবাকের পর অবাক হচ্ছে আজ ৷ ছাঁদটা বেশ বড় বলতে গেলে বাড়িটার একাংশ এটা ৷ চারিদিকে নানা ধরনের ফুল গাছ ৷ এক সাইডে দোলনা ৷ অন্য সাইডে ছোট্ট একটা পুল তার মাঝে অনেক গুলো পদ্ম আর কিছু ভাসমান প্রদিপ ভাসছে ৷ ছাঁদের কানির্শ গুলো মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো ৷ বাতাসে ফুলের সুগন্ধ ব্যাস আর কি লাগে! সমুদ্র ঝিনুককে দোলনায় বসিয়ে ঝিনুকের পায়ের কাছে বসে হাটুর উপর ঝিনুকের পা রেখে পকেট থেকে একটা বক্স বের করে ৷ ঝিনুক সমুদ্রের কর্মকান্ড বুঝে ওঠার আগে সমুদ্র খুব সুন্দর একটা পায়েল বের করে ঝিনুকের পায়ে পড়িয়ে দিয়ে পায়ে চুমু দেয়৷ সাথে সাথে ঝিনুক পা সরিয়ে ফেলে উঠে দারিয়ে ছাঁদের কানির্শে দারায় সমুদ্র ঝিনুকের পিছুন থেকে জরিয়ে ধরে বলে, “ভালোবাসি প্রিয়তমা বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমায়৷ এক আকাশ সমান ভালোবাসি ৷
যে ভালোবাসার কোন সীমা নেই নেই কোন বাধা ৷ ভালোবাসি প্রিয়তমা বড্ড ভালোবাসি তোমায়৷ কারন একটাই সন্ধ্যেবেলার তুমি আমার ৷ জীবনে প্রত্যেকটা সন্ধ্যেবেলা আমি তোমায় নিয়ে কটাতে চাই ৷ কাটাতে চাই প্রত্যেকটা মুহূর্ত ৷ থাকবে না কোন তৃতীয় ব্যাক্তি থাকবো শুধু তুমি আর আমি বাসবো শুধু ভালো হবে শুধু আমার ৷ কারন আমার অস্তিত্ব তুমি ৷ তোমাকে ছেড়ে বেঁচে থাকা মৃত্যুর মতো যন্ত্রনা ভোগ করার সমান ৷ আমি চাইনা এই কষ্ট পেতে তাই তোমাকে আমাতে মিশে যেতে হবে ৷ থাকতে হবে আমার ভালোবাসার খাচায় বন্দি হয়ে ৷ তোমার চিন্তা ভাবনা তোমার শরীলে প্রত্যেকটা শিরা উপশিরায় এই আরফান সমুদ্র মির্জা থাকবে ৷ কারন আমার একটাই সন্ধ্যেবেলার তুমি ৷ “
ঝিনুক সমুদ্রের প্রত্যেকটা কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো ৷ সমুদ্রের কথা গুলো এই মুহূর্তে ঝিনুকের জায়গায় অন্য কোন মেয়ে হলে সমুদ্রের কথায় মরতেও রাজি হয়ে যেত কিন্ত ঝিনুক! সে মরতে নয় মারতে চায়৷ ঝিনুক তার চেনা জানা সেই প্লাস্টিক হাসি নিয়ে ঘুড়ে সমুদ্রকে জরিয়ে ধরে ৷ হঠাৎ করে তখনি সমুদ্রের ফোনে একটা মেসেজ আসে ৷ সমুদ্র ঝিনুককে জরিয়ে ধরা অবস্তায় মেসেজ টা দেখে চোখ মুখের রং বদলে গেল ৷ ঝিনুককে টাইডলি একটা হ্যাগ করে ছেড়ে দিয়ে বলে ৷
” প্রিন্সেস এখানে কিছুক্ষন অপেক্ষা করো আমি বিশ মিনিট বাদে ফিরে আসছি আর হ্যা সারবেন্ট দু’মিনিট পর এসে তোমায় কফি দিয়ে যাবে চুপচাপ খেয়ে নিবে””
ঝিনুক মাথা নেরে সায় জানায়৷ সমুদ্র ফোনটা পকেটে রেখে নিচে নেমে গেল৷
” স্যার আপনার কথা মতো লোকটাকে নিচের বেসমেন্টে বেধে রাখা হয়েছে৷”
রাফির কথা শুনে সমুদ্র শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো ৷ বেসমেন্টের সামনে এসে শার্টটা খুলে রাফির মুখে ছুড়ে মেরে টেবিলের উপর থেকে মোটা রড নিয়ে এগিয়ে যায় লোকটির দিকে ৷ লোকটা চোখের সামনে সমুদ্রকে দেখে চমকে যায়৷ লোকটা ভয়ে মনে মনে বলতে লাগলো” আরে এই তো সেই লোকটা একঘন্টা আগে একটা সুন্দরী মেয়ের সাথে গাড়িতে যেতে দেখেছিলো ৷ মেয়েটি এতো সুন্দর লাগছিলো যে সে চোখ ফিরাতে পারেনি ৷ চোখ দিয়ে মেয়েটাকে গিলে খাচ্ছিলো সাথে নোংড়া অঙ্গভঙ্গি করতে লাগলো ৷ যেটা সমুদ্রের চোখ এরায়নি ৷
দুই উরুর মাঝখানে আঘাত পেয়ে লোকটি তার ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এসে চোখ মুখ খিচে সমুদ্রের দিকে তাকাতে লোকটার ভয়ে গলা শুকিয়ে গেল সমুদ্রের হিংস্র রুপ দেখে ৷ সমুদ্র লোকটার গলা চেপে ধরে বলতে লাগলো ৷
“” ইউ বাস্টার্ড তোর সাহস কি করে আমার প্রিন্সেসের দিকে তোর ওই নোংরা চোখ দিয়ে তাকিয়ে দেখার হাহ!””
“” মা,, মাফ করে দি,,দিন””
“” আরফার সমুদ্র মির্জা কখনো কাউকে দ্বিতীয় বার সুযোগ দেয় না আর না তুই পাবি ৷ “
সমুদ্র লোকটাকে বলার সুযোগ না দিয়ে লোহার রড দিয়ে মেরে পায়ের হাড় ভাঙে তারপর অন্ডকোষ বরাবর লাথি মারে কয়েকবার তবুও রাগ সামলাতে না পেরে রড দিয়ে সেখানে কয়েকবার আঘাত করে ৷ রাগে সমুদ্রের কোন দিকে হুস নেই ৷ রাফি একটু দুরে দারিয়ে সবটা দেখছে ৷ সমুদ্র রড ফেলে টেবিলের উপর থেকে নাইফ নিয়ে লোকটার গলা চেপে ধরে ৷ লোকটার জিব্বাহ বের হতে সমুদ্র লোকটার জীব্বাহ কেটে দিয়ে বলে….
“” এই চোখ দিয়ে তুই আমার প্রিন্সেসের দিকে নোংরা দৃষ্টি দিয়েছিস না ? তোর চোখ আমি রাখবো না””
কথাটা বলে সমুদ্র নাইফ দিয়ে লোকটার দুটো চোখ তুলে ফেলে৷ সাথে সাথে চোখ জিব্বাহ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে ৷ রাফি দুর থেকে লক্ষ করেছে লোকটার জিব্বাহ কাটার একমিনিটের মাথায় লোকটির প্রানবায়ু বের হয়ে গেছে তবুও সমুদ্র থামছে না৷
মৃত লোকটার দু’হাত কেটে ফেলে বুকে কয়েকবার আঘাত করে শান্ত হয় সমুদ্র৷ সমুদ্র নাইফটা ছুড়ে ফেলে পিছুনে ঘুরে তাকাতে সমুদ্র চমকে যায় কারন রাফির পিছুনে ঝিনুক দারিয়ে চোখে মুখে আতঙ্ক ভয় ৷ চোখের সামনে এমন নির্মম নৃশংস ভাবে কাউকে খুন হতে দেখে ঝিনুক আর সহ্য করতে পারলো না ওখানে জ্ঞান হারিয়ে পরে যেতে নিলে সমুদ্র দৌড়ে এসে ঝিনুককে বুকে জরিয়ে ধরে৷ সমুদ্রের শরীলে রক্তে ঝিনুকের শাড়িতে লেগে যায়৷ এক কথায় রক্ত দু’জনে শরীলে লেগে গেছে৷
চোখ মেলে তাকিয়ে নিজেকে অচেনা রুমে আবিষ্কার করে ঝিনুক ঘাবড়ে যায় পরক্ষনে ধিরে সবটা মনে পড়ে যায় ঝিনুকের, কিভাবে একটা লোক কে নৃশংস ভাবে খুন করলো৷ সমুদ্রের শরীলে রক্ত মাখা যেন সবে মাত্র রক্ত দিয়ে গোছল করে উঠেছে সমুদ্র ৷ কতোটা ভয়ঙ্কর নৃশংস সমুদ্র ভাবতেই কলিজা শুকিয়ে আসছে ৷ ঝিনুক পানি খাওয়ার জন্য বিছানা থেকে নেমে পানির বোতলটা নিতে যাবে তখনি আয়নায় নিজে কে দেখে চমকে গেল ঝিনুক৷
” আ,,আমি তো শাড়ি পড়া ছিলাম ৷ প্লাজু আর টিশার্ট কে… বাকিটা বলার আগে সমুদ্র খাবারের ট্রেটা নিয়ে ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল৷
” আমি চেন্জ করিয়ে দিয়েছি তোমায়”
ঝিনুক ঘৃনা চোখে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে লোকটা এতো খারাপ ভাবতে ঝিনুকের চোখ দিয়ে অশ্রুকনা গড়িয়ে পড়লো৷
“” খেয়ে নেও প্রিন্সেস তোমার শরীল এখনো খুব দূর্বল “”
সমুদ্রের এমন নরমালি বিহেবিয়ার দেখে ঝিনুক সত্যি কিংকতব্যবিমুঢ় ৷ মানুষ যে এরকম হতে পারে তার বিন্দুমাত্র ধারনা ছিলো না ৷ কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব ধরে আছে সমুদ্র…
“” আপনি আমার কাপড় বদলেছেন কেন?”
” আমি তোমার হাসবেন্ট সুইটহার্ট এতোটুকু আমি করতেই পারি “
” ছিঃ আপনি কতোটা নিকৃষ্ট বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ পুরো সাইকো পাগল ৷ “
” প্রিন্সেস মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলো ৷ রাগিয়েও না আমাকে তাহলে ক্ষতি সব চেয়ে তোমার হবে৷”
“” কি ক্ষতি করবেন আমার? মা বাবা কে আগে শেষ করে দিয়েছেন আর কি ক্ষতি করবেন?””
” পূর্নতা!””
“”ওর নাম নিয়ে ভয় দেখালে বুঝি আমি ভয় পেয়ে যাবো? পূর্ণ কে আপনি আর খুজে পাবেন না মিস্টার আরফান সমুদ্র মির্জা ৷ পূর্ণ এখন আপনার হাতের বাইরে…””
ঝিনুকের কথা শুনে সমুদ্র বাকা হেসে নিজের ফোনটা বের করে একটা ভিডিও চালু করে ঝিনুকের মুখের সামনে ধরে সমুদ্র ৷ ঝিনুক ভিডিওটা দেখে ধপ করে বিছানায় বসে পড়ে৷
কাঁপা কাঁপা গলায় সমুদ্রকে বলতে লাগলো….
“” আ,, আমার ব,,বো,,নের কোন ক্ষ,,তি করবেন পি,,,প্লিজ””
সমুদ্র বাকা হেসে ঝিনুককে বলল ” সেটা এখন তোমার উপর ডিপেন্ট করছে প্রিন্সেস ৷ তুমি এর পর ঠিক কি কি করবে তার উপর ডিপেন্ট করছে আমি কি করবো পূর্ণতার সাথে…””
ঝিনুকের মুখের ভাষা হারিয়ে গেছে ৷ পূর্ণতা যে এতো তারাতারি খুজে পাবে এটা ভাবতে পারেনি ঝিনুক ৷ প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে ঝিনুকের কিন্তু কাদঁতে পারছে না সমুদ্রের সামনে ৷ নিজের দূর্বলতা আর প্রকার করতে চায় না ঝিনুক সমুদ্রের সামনে ৷ কান্না গুলো গলায় দলা পাকিয়ে আছে ৷ সমুদ্র নিজের হাতে ঝিনুককে খাইয়ে দিতে লাগলো ৷ ঝিনুক খাবে না বলতে গিয়েও বললো না যদি আদরের ছোট বোনের কোন ক্ষতি করে দেয় সমুদ্র এই ভয়ে……
ঝিনুকের খাওয়া শেষ হতে সেই প্লেটে আরো খাবার নিয়ে ঝিনুক কে বলে
” এবার আমাকে খাইয়ে দেও আর আজ থেকে তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে গট ইট”
ঝিনুক কোন রিয়েক্ট করে না তবুও সমুদ্র জানে ঝিনুক তার কথা মতোই এবার থেকে চলবে যেটা সে প্রথম থেকে চেয়ে আসছে৷
ঝিনুক এখন বুজতে পারছে সমুদ্র তাকে সারপ্রাইজ টা কি দিতে চেয়েছিলো৷ ঝিনুক এবার নিজের মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো” সমুদ্রকে আমি কিছুতেই ছাড়বে না ৷ শুরুটা সমুদ্র মির্জা করেছে আর শেষ টা আমি করবো ৷ কিন্তু আফসোস তখন এই সমুদ্র মির্জা কিচ্ছু করতে পারবে না ৷ তৈরি থাকুন মিস্টার আরফান সমুদ্র মির্জা সব কিছুর শাস্তি আপনি পাবেন আর আমি দিবো ৷”
রাতে সমুদ্রের বুকে মাথা রেখে ঝিনুককে ঘুমাতে হয়৷ সমান্যতম নরাচরা করা বারন৷ সেই রাতে সমুদ্র ঝিনুককে নিয়ে মির্জা বাড়িতে ফিরে আসে ৷ তবে এবার আর ঝিনুকের পায়ে লোহার শিকল পড়ায় না সমুদ্র ৷ তবুও রুমের বাইরে যাওয়া পুরো পুরি নিষেধ তার জন্য ….
পরের দিন সকাল বেলা সূর্যের মিষ্টি রোদ মুখে পরতে সমুদ্রের ঘুম ভেঙে যায় ৷ নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে বুকের সাথে লেপ্টে ঘুমাতে দেখে সমুদ্রের ঠোটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে ৷ মুখের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে কপালে আলতো করে ঠোট ছুইয়ে দিয়ে ঝিনুককে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল৷ ফ্রেস হয়ে বের হয়ে সমুদ্র দেখে তার ফোন ভাইব্রেট হচ্ছে ৷ সমুদ্র ফোনটা নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে কল রিসিব করে…
“” হ্যালো স্যার , স্যারি স্যার এতো সকালে ফোন করার জন্য”
” ডোন্ট ওয়েস্ট মাই টাইম রাফি ৷ যা বলার দ্রুত বলো””
“” স্যার রায়হান চৌধুরী আবার গোপনে আপনাকে খুন করার জন্য লোক লাগিয়েছে ৷ লোক গুলোকে আমি গতকাল রাতে ধরে ফেলি ৷ আর যে লোকটিকে আপনি গতকাল রাতে মেরেছেন সে লোকটি ওদের একজন ৷ আপনাদের উপর নজর রাখার জন্য ওখানে এসেছিলো৷””
রায়হান চৌধুরীর নাম শুনে সমুদ্রের মেজাজ মুহূর্তে খারাপ হয়ে গেল ৷
” আমি আসছি ওদের ব্যাবস্তা আমি নিজের হাতে করবো “
” ওকে স্যার”
সমুদ্র রুমে এসে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল ৷ সমুদ্র চলে যেতে যেতে ঝিনুক উঠে বসে ৷ ঝিনুকের ঘুম অনেকক্ষন আগে ভেঙে গেছিলো কিন্তু উঠেনি সমুদ্রের জন্য তবে বেলকনিতে দারিয়ে কিছু কথা ঝিনুকের কানে এসে পৌছায় ৷ আজ কার কপালে মৃত্যু নাচছে কে মরবে এটা ভেবে ঝিনুক ঘামতে লাগলো এসি চলা সত্যেও…….
.
.
চলবে……..
লিখেছেনঃ ফারহানা ছবি