সমুদ্র রুমে এসে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল ৷ সমুদ্র চলে যেতে যেতে ঝিনুক উঠে বসে ৷ ঝিনুকের ঘুম অনেকক্ষন আগে ভেঙে গিয়েছিলো কিন্তু উঠেনি সমুদ্রের জন্য তবে বেলকনিতে দারিয়ে কিছু কথা ঝিনুকের কানে এসে পৌছায় ৷ আজ কার কপালে মৃত্যু নাচছে কে মরবে এটা ভেবে ঝিনুক ঘামতে লাগলো এসি চলা সত্যেও…….
ঝিনুক উঠে ফ্রেস হয়ে ত্রিপিস পড়ে নিয়ে রুম থেকে বের হতে যাবে তখনি মনে পরে সমুদ্রের বলা কথাটা “এই রুম থেকে বের হওয়া তার জন্য নিষেধ” অগ্যতা ঝিনুক পুরো রুমে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো ৷ দামী দামী সোপিচ আসবাবপত্র ফ্লাওয়ারবাজ, অর্ধেক দেওয়াল জুড়ে তার আর সমুদ্রের একটা ছবি ৷ তবে অন্য দেওয়াল গুলোতেও দুজনের ছবি লাগানো৷ ঝিনুকের ঠিক মনে আছে সমুদ্র যখনি খুব রেগে হিংস্র জানোয়ারের মতো আচরন করে তখন সব কিছু ভেঙে চুরে ফেলে তবে আবার ঠিক সেই স্থানে জিনিস গুলো কি করে আসে আর আসে যখন তখন আমি কেন দেখতে পাই না? ভাবনা গুলো ঝিনুকের মাথায় বেশ ঘুরপাক খাচ্ছে ৷ আর তার চেয়েও বড় কথা আজ সমুদ্র কাকে খুন করবে? কে হচ্ছে তার পরবর্তী শিকার?” সন্ধ্যে বেলার তুমি
চারজন লোক কে অর্ধ উলঙ্গ করে উলটো করে ঝুলিয়ে লোহার রড দিয়ে বেধরম পেটাচ্ছে সমুদ্র ৷ তাতেও যেন তার রাগ কমছে না ৷ রায়হান চৌধুরীর লোক জেনে রাগটা শতগুন বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রত্যেকটা মুহূর্তে ৷
” স্যার এদের কে আমার হাতে ছেড়ে দিন আমি এদের কে দেখে নিচ্ছি”
” নাহ! রাফি এরা আমার শিকার ৷ রায়হান চৌধুরীর লোক তাই না? “” সমুদ্র লোক গুলোর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো৷
” আল্লাহ স্যার নিশ্চয় এদের জন্য ভয়ঙ্কর কিছু ভেবে রেখেছে ৷ আবার ও ভয়ঙ্কর মৃত্যু দেখতে হবে নিজের চোখের সামনে , আল্লাহ আমার স্যার কে সুস্থ করে দেও ৷ আমি এতিম বাচ্চাদের খাওয়াবো ৷”
কথা গুলো রাফি মনে মনে বলল , সমুদ্রের সামনে এই কথা গুলো বলার সাহস রাফির নেই৷
সমুদ্র হাতে চাপাতি নিয়ে প্রত্যেকের পায়ের দড়ি কেটে দিলো ৷ প্রত্যেক জন মুখ থুবড়ে পড়লো মাটিতে৷ শুরু হয়ে গেল সমুদ্রের হিংস্রতা ৷ ধাড়ালো চাপাতি দিয়ে একে একে প্রত্যেককে কেটে টুকরো টুকরো করলো৷ রক্তে ভেষে যাচ্ছে ৷ সে দিকে সমুদ্রের খেয়াল নেই ৷ সে মেতে আছে তার হিংস্র খেলায়৷ কিছুক্ষন পর টকবগে ফুটতে থাকা গরম তৈলে টুকরো গুলো ফেলে দিলো ৷ রাফি আর সহ্য করতে না পেরে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল৷ কিছুক্ষন পর সমুদ্র সেই লোক গুলোর শরীরের তৈলে ভাজা টুকরো গুলো তার পোষা কুকুর গুলোর সামনে দিতে কুকুর গুলো হামলে পড়ে সেগুলো খেতে লাগলো৷ কুকুর গুলো কে খেতে দেখে সমুদ্রের মুখে তৃপ্তির হাসি ৷
মাত্র শাওয়ার নিয়ে শরীরের রক্ত ধুয়ে ফেলে সমুদ্র ৷ এখনো ঠোটের কোনে তৃপ্তির হাসি ৷ সমুদ্র শাওয়ার নেওয়া শেষ করে চেন্জ করে নেয়৷ সমুদ্র তার খুব প্রিয় একটা জায়গায় তার শিকার গুলোকে মারতে পছন্দ করে৷ আজও তার ব্যাতিক্রম হলো না কিন্তু এখন তার প্রিন্সেসের কথা বড্ড বেশি মনে পড়ছে ৷ সমুদ্র ফোন বের করে সি সি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করতে লাগলো ৷ সকাল থেকে এখন করা ঝিনুকের প্রত্যেকটা কাজ দেখেছে সমুদ্র ৷ সমুদ্র এটা ভেবে খুশি তার প্রিন্সেস তার কথা মতো রুমের বাইরে যাইনি বরং রুমে ভিতর রয়েছে৷
দুপুর দু-টো বেজে দশ মিনিট ৷ এখনো সমুদ্রকে ফিরতে না দেখে ঝিনুকের বড্ড চিন্তা হচ্ছে ৷ কিন্তু কেন এটা ঝিনুক নিজেও বুজতে পারছে না৷ ঝিনুক বেলকনি আর রুম শুধু পাইচারি করছে ৷
” আল্লাহ সাইকোটার হলো টা কি আজ? এখনো আসছে না কেন? কোন বিপদ হয়নি তো? কথাটা বলে নিজের মাথায় চাটি মেরে আবার বলতে লাগলো ঝিনুক হাহ! কি ভাবছি সাইকোর বিপদ হবে ? যে বিপদ ডেকে আনবে তাকে সে নৃশংস ভাবে খুন করে উপরে চালান করে দিবে কারো সাহস নেই আরফান সমুদ্র মির্জার কোন ক্ষতি করার আর আমি হুদাই ভাবছি ওই সাইকোর কথা৷ এক মিনিট আমি কেন ওর কথা ভাবছি? ও আমার মা বাবা খুনি ওর কথা আমি ভাববো না বরং কি করে ওকে শাস্তি দেয়া যাবে সেটা নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে ৷
আচ্ছা ওই আন্টি কি যেন সেদিন বলছিলো হ্যাঁ ওনাকে ঔষধ খাওয়ানোর কথা ৷ কিন্তু কি করে ওনাকে আমি মানাবো? ভালোবেসে? ধ্যাত কি করে সম্ভব আমি তো সাইকোটাকে ভালোবাসি না বরং প্রচন্ড ঘৃনা করি ৷ কিন্তু তবুও আমাকে একটা চান্স নিতে হবে হ্যাঁ এটাই হবে আমার লাস্ট সুযোগ আর আমি এই সুযোগ কিছুতেই হাত ছাড়া করবো না ৷ এবার না হয় এস্পার হবে নয়তো ওস্পার৷”
ঝিনুক কথা গুলো বিরবির করে বলতে বলতে দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে সমুদ্র৷ কালো শার্ট কোর্ট প্যান্ট হাতে কালো ঘড়ি পায়ে শু ৷ সিল্কি চুল গুলো এলোমেলো হয়ে কপাল ছেয়ে আছে ৷ ঘন গাঢ় সবুজ বর্নের চোখ জোড়ার তীক্ষ্ণ চাউনি আর ঠোটে লেগে থাকা মিষ্টি হাসি দেখে ঝিনুকের মনে হলো কয়েক মুহূর্তে সমুদ্রের তীক্ষ্ণ চাউনি তার ভিতর কার সব কথা পড়ে ফেলছে ৷ ঝিনুক দ্রুত তার চোখ জোড়া নামিয়ে নেয়৷ কিন্তু সমুদ্র উলটো ঝিনুকের কাছে এসে ঝিনুকের কোমড় জরিয়ে ধরে কানের কাছে ওষ্ঠাধর ছুইয়ে বলল, ” ভালোবাসি প্রিন্সেস বড্ড বেশি ভালোবাসি ৷ তোমার ঠোট তোমার চুল তোমার মায়াবী চোখ , তোমার গাল তোমার কোমল হাত সব কিছুকেই ভালোবাসি প্রিয়তমা ” সন্ধ্যে বেলার তুমি
সমুদ্রের কথা তার নিশ্বাস গুলো আচড়ে পড়ছে ঝিনুকের গলায় ৷ শিউরে উঠছে ঝিনুক৷ রিতি মতো কাপঁতে লাগলো ঝিনুক ৷ সমুদ্র ঝিনুকের অবস্তা বুজতে পেরে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে৷ প্রচন্ড দ্রুত গতিতে হৃদপিন্ড লাফাচ্ছে যেন মনে হচ্ছে এখুনি লাফিয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে আসবে বলে মনে হয়৷ সমুদ্র ঝিনুকের হার্টবিট শুনতে পাচ্ছে ৷ ঝিনুক সমুদ্রের কোট খামচে ধরে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে ৷ সমুদ্র ঝিনুকের এক হাত কোমড়ে রেখে অন্য হাত পুরো পিঠে বিচরন করতে লাগলো৷ ঝিনুকের বুজতে বাকি রইল না যে সমুদ্র ইচ্ছে করে এমন টা করছে৷ ঝিনুক নিজের ঠোঁট জোড়া দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে ৷
এতোটা জোড়ে ধরে যে ঠোট কেটে রক্ত বেরিয়ে আসে ৷ ঝিনুকের হৃদপিন্ডের স্পন্দন ধিরে ধিরে স্বাভাবিক হয়ে আসলো সমুদ্র বিষয় টা বুজতে না পেরে ঝিনুককে ছেড়ে একটু দুরে সরে দারিয়ে ঝিনুককে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো ৷ কিন্তু হঠাৎ ঝিনুকের ঠোট গড়িয়ে রক্ত বের হতে দেখে সমুদ্রের মাথা ঘুড়ে গেল ৷ দ্রুত ফাস্টএইড বক্স নিয়ে এসে ঠোঁটের রক্ত মুছিয়ে দেয় সমুদ্র ৷
” এটা তুমি ঠিক করলে না প্রিন্সেস ৷ তোমার কোন অধিকার নেই নিজের ক্ষতি করার ৷ আজ যেটা করলে তার প্রাপ্য শাস্তি তুমি পাবে ৷ “
কথা টা বলে সমুদ্র ওয়াশরুমে ঢুকে চেন্জ করে রুমের বাইরে চলে যায়৷ তবে কিছুক্ষন পর ফিরে আসে ৷ হাতে খাবারের ট্রে নিয়ে৷
খাবার দেখে ঝিনুকের চোখ যেন কপালে উঠে গেল৷ ট্রে তে শুধু দু-প্লেট ভাত আর মরিচ ভর্তা ৷ ঝিনুক মটেও ঝাল খেতে পারে না৷ অবশ্য ফুচকা খাওয়ার সময় একটু ঝাল খেত তবে তার বিনিময়ে পুরো রাত ঘুমাতে পারতো না পেটে ব্যাথায় ৷ সে কথা ভাবতে ঝিনুকের পুরো শরীর হীম হয়ে আসছে ৷ তবে সমুদ্রের কোন পরিবর্তন হলো বলে মনে হলো না ৷
“” দশ মিনিটের ভিতর খাবার টা খেয়ে নিবে নাহলে…””
ঝিনুক আর সমুদ্রের হুমকির অপেক্ষা করে বসে রইল না কারন তার জানা হয়ে গেছে এখন এটাই তাকে খেতে হবে কারন এটাই তার শাস্তি৷ দু’লোকমা মুখে দিতে ঝিনুকের চোখ মুখ লাল হয়ে গেল ৷ লাকের ঢোগা লাল টকটকে হয়ে আছে৷ চোখে পানি টলটল করছে৷ তবুও ঝিনুক থেমে নেই ৷ কয়েক লোকমা খেয়ে নিলো ৷ ঝালের জন্য ঝিনুক কোন কথাই বলতে পারছে না৷ চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে৷ ৷ ঠোট জোড়া লাল টকটকে হয়ে আছে ৷ সমুদ্র ঝিনুকের হাত থেকে খাবারের প্লেট টা ছিনিয়ে নিয়ে ঝিনুকের ওষ্ঠাধর নিজের ওষ্ঠদ্বয়ের আয়ত্তে নিয়ে নিলো৷ আচমকা এমন আক্রমনের জন্য ঝিনুক মটেও প্রস্তত ছিলো না৷ তবে ঝালের তিব্রতা এতোটাই ছিলো যে ঝিনুক সহ্য করতে না পেরে সমুদ্র কে নিজের থেকে সরাতে পারলো না৷
দশ মিনিট পর সমুদ্র ঝিনুককে ওষ্ঠধর ছেড়ে দিয়ে ঝিনুকের দু’চোখের পানি ঠোট দিয়ে শুষে নেয়৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি
“” ইউ নো ওয়াট সুইটহার্ড আমার কথার অবাধ্য হলে আমি কাউকে ছাড়ি না সেখানে তুমি তোমার ঠোট কেটে নিজেকে নয় আমাকে কষ্ট দিয়েছো৷ আর আরফান সমুদ্র মির্জাকে কষ্ট দিলে কষ্ট তো তোমাকেও পেতে হবে ৷ নেক্সট টাইম থেকে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার কথা ভাবলে আজকের দিনের কথা স্মরণে রেখো আর ভূলে গেলেও সমস্যা নেই আমি আছি তো! তোমাকে মনে করিয়ে দেব না হয়৷ “”
ঝিনুক এখন চুপ যেন ওই সময় টা থেকে এখনো বার হতে পারেনি৷ সমুদ্র আলতো করে ঝিনুকের ঠোটঁ জোড়ায় চুমু খায়৷ সাথে সাথে ঝিনুক উঠে দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বেসিং এর কল ছেড়ে দিয়ে পাগলের মতো কাঁদতে লাগলো৷
সমুদ্র জানে ঝিনুক কেন এভাবে দৌড়ে চলে গেল৷ সমুদ্র ঝিনুককে কিছু না বলে ঝিনুকের এটো অর্ধেক খাবারটা ধিরে সুস্থে খেয়ে নেয়৷ ঝিনুক কেঁদে নিজেকে শান্ত করে রুমে এসে সমুদ্র কে তার এটো অতিরিক্ত ঝাল খাবার টা খেতে দেখে বেশ অবাক হয় ৷
ঝিনুক দ্রুত গিয়ে প্লেট টা সমুদ্রের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বলে ” আর ইউ ম্যাড সমুদ্র ৷ এতো ঝাল খাবার আপনি কেন খাচ্ছেন ? আপনার চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমার মতো-ই একদম ঝাল খাবার খেতে পারেন না৷ তাহলে কেন খাচ্ছেন?” প্লেট টা দেও প্রিন্সেস” শান্ত গলায় বললো সমুদ্র..
সমুদ্রকে শান্ত স্বরে কথা বলতে শুনে ঝিনুক বেশ অবাক হয়৷ কিন্তু এখন যদি প্লেট টা সমুদ্রের হাতে না দেয় তাহলে আবার রেগে কি থেকে কি করে ফেলবে তার কোন ধারনা নেই ঝিনুকের তাই রিক্স না নিয়ে আবার প্লেট টা সমুদ্রের হাতে দিয়ে দিলো ৷ সমুদ্র আবারও খাবার টা খেতে লাগলো ৷ ঝিনুকের কেন যেন সহ্য হচ্ছে না এই সব ৷ ঝিনুক বরাবর নরম মনের মেয়ে তাই হয়তো তার শত্রুর কষ্ট দেখে সে নিজেও কষ্ট পাচ্ছে৷
ঝিনুক সমুদ্রের অনুমতি না নিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে নিচে খুজে খুজে কিচেনে এসে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতল আর ফ্রিজে মিষ্টি দেখতে পেয়ে তা নিয়ে দৌড়ে উপরে চলে আসে ৷ মিসেস সোহিনী মির্জা ড্রইংরুমে বসা ছিলেন ৷ হঠাৎ ঝিনুককে নিচে দেখে খুশি হন কিন্তু ঝিনুককে এভাবে কিচেনে ঢুকে পানি আর মিষ্টি নিতে দেখে সন্ধেহ হয় ৷ তিনি ঝিনুকের পিছু পিছু উপরে গেলেন ৷
ঝিনুক রুমে ঢুকে একটা মিষ্টি নিয়ে সমুদ্রের মুখে ঢুকিয়ে দিলো ৷ সমুদ্র তার লাল চোখ জোড়া দিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনি ঝিনুক বলে ওঠে ” স্যরি স্যরি আপনার অনুমতির অপেক্ষা না করে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য ৷ আপনার অবস্তা কতোটা খারাপ হচ্ছে দেখেছেন? নিশ্চয় নয় তাহলে আয়নায় আপনার সুন্দর চেহারা খানা দেখুন দয়া করে ৷ লাল লাল রেস উঠেছে৷ নিশ্চয় আপনার ঝালে এলার্জি আছে তাই না?”
সমুদ্র আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি তার মুখ লাল লাল রেস ৷
সমুদ্র বাটি থেকে আর একটা মিষ্টি নিয়ে ঝিনুকের মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে বলে ” আবার আমার কথার অমান্য করেছো তবে এখন আর শাস্তি দিলাম না ক্ষমা করলাম তবে এটাই শেষ বার৷”
দরজার পাশে লুকিয়ে মিসেস সোহিনী মির্জা ঝিনুকের কাজ টা দেখে ভিষন খুশি হন৷ দ্রুত দরজার পাশ থেকে সরে যান৷
এদিকে ঝিনুক মিষ্টি খেতে খেতে ভাবতে লাগলো ” সাইকোটা আমাকে শাস্তি দিয়ে নিজেকেও শাস্তি দিলো কিন্তু কেন? শাস্তি তো শুধু আমার একার পাওনা তাহলে? যাই হোক এবার আর আমি প্রথম বারের মতো ভুল করবো না ৷ আর না সাইকোটার বিশ্বাস ভাঙবো ৷ শুধু সময়ের অপেক্ষা তারপর সুদে আসলে সবটা ফিরিয়ে দিবো৷ “
সমুদ্র মিষ্টি আর ঠান্ডা পানি খেয়ে কোট খুলে বিছানায় শুয়ে পড়ে৷ ঝিনুক হুট করে সমুদ্রের পা থেকে শু খুলে রাখে ৷ ঝিনুক সমুদ্রের মুখের দিকে ভালো করে তাকিয়ে সমুদ্রের চিবুকে গাঢ় কালো তীলটা চোখে পড়ে ৷ ঝাল খেয়ে ঠোট নাক গাল লাল হয়ে আছে৷ তবে বেশ লাগছে দেখতে পুরো স্টোব্রেরি ৷ নেশা ধরানো মতো ৷
“” আই এম শিওর সাইকো টা সিনেমায় করতে চাইলে মুহূর্তে সুযোগ পেয়ে যাবে৷ সমুদ্র যে হলিউড বলিউড এর নায়কের থেকে হাজার গুন বেশি সুন্দর এটা শিকার করতে ঝিনুকের কোন আপত্তি নেই৷ কিন্তু সমুদ্রের হিংস্র রুপ যখনি চোখের সামনে ভেষে উঠে তার মা বাবার মৃত্যুর কথা মনে আসে তখন এই সুন্দর সুপুরুষ কে কুৎসিত কদাচিত মানুষ মনে হয়৷
চোখ ফিরিয়ে নিলো ঝিনুক ৷ বেলকনিতে দারিয়ে শূন্য চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ নীল আকাশের মাঝে কালো মেঘের ঘনঘটা চারিদিকে ঝড়ো বাতাস বইছে তার সাথে সাথে ঝিনুকের ঢেউ খেলানো কোকড়ানো চুল গুলো দুলতে লাগলো৷ ছুয়ে দিতে লাগলো পুরো শরীর৷ ঝিনুক চোখ বন্ধ করে বাতাসের সাথে মেঘের গন্ধ নেওয়ার চেষ্টা করছে ৷ হয়তো মেঘের কোন গন্ধ নেই তবুও ঝিনুক তা বিশ্বাস করে না ৷ সে মনে করে প্রত্যেকটা জিনিসের গন্ধ আছে ৷ ঝিনুক চোখ বন্ধ করে পুরনো দিনের কথা ভাবতে লাগলো ….. সন্ধ্যে বেলার তুমি
“” আপু দেখেছিস আকাশে কি সুন্দর মেঘ করেছে?”
” সুন্দর মেঘ!”
” হ্যাঁ আপু সুন্দর মেঘ ৷ এখুনি ওই মেঘের গা ঘেষে বৃষ্টি পড়বে চলনা আপু ছাঁদে যাই অনেকদিন হলো বৃষ্টিতে ভেজা হয়নি৷””
ঝিনুক তার ছোট বোনের আবদার ফেলতে পারলো না ৷ হাত থেকে হুমায়ূন আহমেদের হিমু বইটা রেখে দু’বোনে হাত ধরে দৌড়ে ছাঁদে চলে এলো৷ ছাঁদে আসতে বাধ ভাঙা বৃষ্টি পড়তে লাগলো ৷ বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে পূর্নের গানের তালে তালে ঝিনুকের নাচ ৷
পুরনো মুহূর্তের কথা ভাবতে ভাবতে ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো ঝিনুকের কিন্তু বেশিক্ষন আর এই হাসি মুখে থাকলো না মিলিয়ে গেল দূরে দারিয়ে থাকা মানুষটিকে দেখে……
.
.
চলবে……..
লিখেছেনঃ ফারহানা ছবি