” জ্বি তবে সমুদ্র সুস্হ হওয়ার পর তার করা অপরাধের শাস্তি পাবে সে, আমার বাবা মাকে খুন করার শাস্তি আমি ওকে নিজের হাতে দিবো কথা দিলাম..”
ঝিনুকের কথায় হতবাক হয়ে যায় মিসেস মির্জা ৷ তিনি ঝিনুককে কিছু বলতে যাবেন তখনি কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে যায়….
ঝিনুক দরজার দিকে তাকিয়ে আছে সমুদ্রের আশার অপেক্ষায় ৷ সমুদ্র খাবারের ট্রে নিয়ে ভিতরে ঢুকে ঝিনুকের দিকে তিক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে খাবার টা টেবিলের উপর রেখে ঝিনুককে বলল”প্রিন্সেস ফ্রেস হয়ে এসো দেন খাবার খেয়ে মেডেসিন খেতে হবে তোমাকে..”
ঝিনুক মাথা নিচু করে বিছানা থেকে নামতে ক্ষত পায়ে ব্যাথা অনুভব করলো৷ ঝিনুক চোখ মুখ খিচে বিছানার চাদর খামচে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে উঠে দারিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে নিলে সমুদ্র ঝিনুককে কোলে তুলে নিয়ে বলে” তোমার সামান্যতম কষ্ট আমার সহ্য হয়না কিন্তু তোমার দেওয়া কঠিন থেকে কঠিনতম আঘাত সহ্য করছি আমি৷ আমার ভালোবাসা তুমি সেদিন বুজবে যেদিন আমি থাকবো না “
কথাটা বলে সমুদ্র ঝিনুককে ওয়াশরুমে রাখা টুলের উপর বসিয়ে দরজা চাপিয়ে বাইরে দারিয়ে থাকে৷ ঝিনুকের কানে সমুদ্রের কথা গুলো পৌছালেও বোঝার মতো ক্ষমতা নেই ৷ শাওয়ার অন করে ভিজতে ঝিনুকের পুরো শরীলে যেন কেউ আগুন ধরিয়ে দিসে এমন মনে হলো ৷ মার খাওয়া জায়গা গুলোয় পানি লাগতে জ্বলতে লাগলো৷ প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে ঝিনুকের তবুও দাঁতে দাঁত চেপে কাঁদতে লাগলো ৷ চাঁপা কান্নার আওয়াজ সমুদ্রের কানে না পৌছায় তাই মুখ চেপে ধরে কাঁদছে ৷ তবুও সমুদ্রের কানে ঝিনুকের কান্নার পৌছে যায়৷ সমুদ্র রাগে কটমট করে দরজার ওপাশ থেকে বলতে লাগলো “” প্রিন্সেস দশ মিনিটের ভিতর শাওয়ার নিয়ে বের না হলে আমি ভিতরে ঢুকে যাবো আর নিজের হাতে চেন্জ করাবো রাজি থাকলে লেট করো আই এ্যাভ আ নো প্রব্লেম “”
সমুদ্র যে রেগে কথা গুলো বললো তা বুজতে ঝিনুকের বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয় না ৷ দ্রুত শাওয়ার নিয়ে চেন্জ করতে যাবে তখনি মনে পড়ে সে ভিতরে আসার সে সাথে কোন কাপড় আনে নি৷ তাই ধির কন্ঠে সমুদ্রকে বলল” আমি কোন কাপড় আনি নি আপনি কাবার্ড থেকে একটা ড্রেস এনে দিন প্লিজ”
ঝিনুকের কথা শেষ হওয়ার পূর্বে দরজার সামান্য খুলে সমুদ্র ঝিনুককে প্লাজু আর একটা ঢোলা টিশার্ট এগিয়ে দেয় ঝিনুক কোন বাক বিতর্ক ছাড়াই ওগুলো পড়ে নিয়ে ভিজে চুল গুলো দু’সাইডে ফেলে বের হবে তখনও সমুদ্র সেম কাজটাই করে ৷ ঝিনুককে কোলে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে ভেজা চুল গুলো তোয়ালে দিয়ে হালকা মুছে দিয়ে হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে চুল গুলো শুকিয়ে দিয়ে চুল গুলো ব্রাস করে দিয়ে বেনি করতে লাগলো৷ ঝিনুক শুধু অবাক হয়ে সমুদ্রকে দেখছে আর ভাবছে” এই মানুষটা এই ভালো আবার এই খারাপ ৷ এই আগ্নেয়গিরির মতো রেগে ওঠে আবার এই শীতল পানির ন্যায় রুপ ধারন করে ৷ কখনো চোখ মুখে হিংস্রতা ফুটে ওঠে আবার কখনো ভালোবাসা ৷ এতো গুলো রুপ একটা মানুষ কি করে ধারন করতে পারে আবার মুহূর্তে পাল্টাতে পারে ? তবে এবার আর আমি প্রথমবারের মতো ভুল করবো না মিস্টার সাইকো ৷৷আপনার খুব বুদ্ধি তাই না? এবার আমিও দেখবো কি করে আমার অভিনয় আপনি ধরতে পারেন? আপনাকে আমি সুস্থ করে তুলবো তবে সেটা আপনার পরিবারের জন্য নয় আমার জন্য , আপনি সুস্থ হওয়ার পর শুরু হবে আসল খেলা ৷ তিলে তিলে মারবো আপনাকে যেভাবে কষ্ট পেয়ে আমার মা বাবা আগুনে পুরে মরে গেছে ৷ আমিও সেই আগুনে ফেলে মারবো তবে সেটা হবে অনুতপ্তের আগুন না পাবেন ক্ষমা আর না ভালোবাসা ৷ “
” প্রিন্সেস কি ভাবছো? আবার কি করে পালাবে তাই তো?”
” নাহ আমি আর পালানোর চেষ্টা করবো না সমুদ্র”
সমুদ্র ঝিনুকের মুখে নিজের নামটা শুনে বেশ খুশি হলো এর আগেও শুনেছে তবে তখন মাথায় প্রচন্ড রাগ থাকায় ঝিনুকের কথা গুলো কান অব্দি পৌছে গেলেও খুশি হতে পারেনি৷
” কি বললে আর একবার বলো?”
ঝিনুক খানিকটা ভয় পেয়ে যায় সমুদ্রের কথা শুনে৷
” ডোন্ট ওয়ারি প্রিন্সেস আমি তোমায় কোন পানিশমেন্ট দিবো না নির্ভয়ে বলো”
” আমি আর পালানোর চেষ্টা করবো না সমুদ্র”
” সমুদ্র এই নামে তুমি আমাকে ডাকবে মনে থাকবে?”
ঝিনুক মাথা নেড়ে সায় দেয়৷
” মুখ খোলো আর খাবার টা খেয়ে নেও” ঝিনুক চুপচাপ খাবারটা খেয়ে নেয়৷ সমুদ্র ঝিনুককে খাইয়ে দিয়ে শেষে মেডেসিন খাইয়ে দিয়ে বলে ” প্রিন্সেস ছেলে টা কে?””
সমুদ্রের কথা শুনে ঝিনুকের গলায় পানি যেন আটকে গেল৷ তাই যথা সম্ভব ধিরে ধিরে পানিটা খেয়ে নিয়ে মনে মনে বলতে লাগলো” আল্লাহ এই সাইকোটা মিসাম কে দেখেনি তো? যদি দেখে ফেলে তাহলে কি হবে? ওকে তো মেরে ফেলবে আর পূর্ণতা ওর যদি কোন ক্ষতি করে দেয় সাইকোটা তাহলে কি হবে?” ঝিনুকের ভাবনার মাঝে সমুদ্র ঝিনুকের গাল শক্ত করে চেপে ধরে রাগি গলায় বলল” ছেলেটা যেই হোক না কেন আমার হাত থেকে সে বাচঁতে পারবে না তাই ভালোই ভালোই বলছি কে ওই ছেলে বলে ফেলো আর না হলে আমি নিজে খুজে বের করে ওকে শেষ করে দিবো””
“” না প্লিজ ওকে কিছু করবেন না ও যাস্ট আমার বন্ধু আমাকে সাহায্য করার জন্য এসেছিলো৷”
” শুধুই বন্ধু?”
” হ্যা , শুধুই আমার বন্ধু এর বেশি কিছু না”
” আজ থেকে তোমার লাইফে কোন বন্ধু বান্ধুবী থাকবে না এক আমি ব্যাতিত বুজতে পেরেছো”
“” হ,হ্যা “”
“” গুড , ওই ছেলের পুরো নাম বলো?”
এবার আর ঝিনুক সমুদ্রের কথার কোন উওর দেয় না ৷
“” তোমাকে কিছু প্রশ্ন করেছি প্রিন্সেস””
” আমি এর থেকে বেশি কিছু আর বলতে পারবো না কারন আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না সমুদ্র৷ যে ব্যাক্তি দুটো মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে তাকে অন্তত বিশ্বাস করা যায় না আর আমি করতেও পারবো না ৷”
ঝিনুকের কথা গুলো সমুদ্রের রাগ উঠানোর জন্য যথেষ্ট ৷ সমুদ্র ঝিনুককে আঘাত করতে না পেরে ঝিনুকের ওষ্ঠাধর জোড়া দখল করে নিয়ে সব রাগ তাতে ঢেলে দিতে থাকে ৷ ঝিনুকের শরীলে প্রচন্ড ব্যাথা তার উপর সমুদ্রকে নিজের উপর থেকে সরানোর ক্ষমতা তার নেই ৷ শুধু মাত্র চোখের পানি ফেলা৷
গার্ডেনে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছে সাফাদ ৷ গান শুনতে শুনতে চোখ বন্ধ করতে পূর্ণতার হাসি মাখা মুখটা ভেশে ওঠে ৷ সাথে সাথে সাফাদ চোখ খুলে আশে পাশে পূর্ণতাকে খুজতে লাগলো তখনি হঠাৎ সাফাদের মনে পড়ে গেল পূর্ণতা চলে গেছে ৷
” পূর্ণের মুখটা কেন বার বার আমার চোখের সামনে ভেশে উঠছে ? কেন ওর অনুপস্থিতি আমাকে পোড়ায়? কেন ওর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে সারাক্ষন ৷ কেন ওর কথা ভাবলে বুকের ভিতর ধক ধক করতে থাকে? কেন ওর চোখের পানি আমি সহ্য করতে পারি না?”
“” কারন তুমি পূর্ণতাকে ভালোবেসে ফেলেছো সাফাদ”” মায়ের কন্ঠস্বর শুনে পিছুনে তাকিয়ে দেখে মিসেস সোহিনী মির্জা হাসি মুখে দারিয়ে আছে…
“” মম তুমি কখন এলে?””
” যখন আমার ছোট্ট ছেলেটা তার মনের অনুভুতি গুলো নিজেকে বলছিলো তখন””
মিসেস সোহিনীর কথা শুনে সাফাদ বেশ লজ্জা পায়৷
” আর লজ্জা পেতে হবে না তোমাকে ৷ ছেলে যে আমার বড় হয়ে গেছে ভুলে গেছি ৷ তবে মির্জা বাড়ির ছোট বউ হিসেবে পূর্ণতাকে বেশ ভালোই লাগবে ৷ চঞ্চল প্রকৃতি একটা মেয়ে বাড়িতে থাকলে পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখবে৷ “
” বাট মম পূর্ণ এখন কোথায় আমি কি করে জানবো?”
” খোজ নেও আর ঝিনুক যেহেতু এখানে তখন পূর্ণ ওর বোনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা ডেফিনেন্টলি করবে””
” ইউ আর রাইট মম ৷ আমিও খোজ নিচ্ছি ৷ তবে মম পূর্ণ যদি আমাকে ভালোবাসে তবে সম্পর্ক এগোবে নাহল নয়৷ কারন জোর করে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না৷ “
” আই প্রাউড অফ ইউ মাই সান৷ এটাই হচ্ছে একজন সত্যিকার প্রেমিকের মত কথা ৷”
“” মম আমি তাহলে খোজ নিচ্ছি পূর্ণতার..””
“” হুম তাই করো””
সাফাদ ফোন নিয়ে কাউকে কল করে বাড়ির ভিতরে চলে যায়৷
” হ্যালো স্যার আপনাকে কখন থেকে কল করে যাচ্ছি আপনি কল রিসিব করছিলেন না কেন? এদিকে রিয়াজুল রহমানের অবস্তা খুব একটা ভলো নয়”
“” ইউ ইডিয়ট ওনার অবস্তা ভালো নয় তাহলে বড় কোন হসপিটালে এডমিট না করে আমাকে কেন ফোন করলে?”
” স্যার আপনার পার্মিশনের জন্য..””
” রাসকেল দ্রুত ওনাকে হসপিটালের এডমিট করো৷ তবে সবটা গোপনে ডক্টর নার্স ব্যাতিত যেন তৃতীয় কোন ব্যাক্তি জানতে না পারে””
“” ওকে স্যার “”
ঝিনুকের বাবার অবস্তা খারাপ যেনেও সমুদ্রের কোন যায় আশে বলে মনে হয় না ৷ বেলকনিতে দারিয়ে কথা গুলো বলে রুমে এসে দেখে ঝিনুক শুয়ে কাঁপছে ৷ সমুদ্র দ্রুত ঝিনুকের কপালে হাত দিয়ে কেঁপে ওঠে ৷
“” ওহ মাই গড প্রিন্সেসের তো প্রচন্ড জ্বর৷ ডক্টর হ্যা ডক্টরকে ডাকতে হবে” সমুদ্র ডক্টরের নাম্বার ডায়াল করে একবার রিং হয়ে কল রিসিব হয়৷
” দশ মিনিটের মধ্যে মির্জা বাড়িতে আপনাকে দেখতে চাই ডক্টর”
কথা গুলো বলে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো ৷ ডক্টরকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে৷
ফোন বিছানার কোনে ছুড়ে মেরে ব্লাংকেট দিয়ে জরিয়ে দেয় ঝিনুককে ৷ সমুদ্র ঝিনুকের মাথায় চুমু দিয়ে ঝিনুকের উত্তপ্ত শরীলটা জরিয়ে ধরে ৷ ঝিনুক জ্বরের ঘোরে সমুদ্রের বুকে মাথা গুজে ৷
দশ মিনিটের মাথায় ডক্টর হাপাতে হাপাতে রুমের সামনে এসে দরজায় নক করে ৷ সমুদ্র ঝিনুককে নিজের থেকে ছাড়িয়ে গলা পর্যন্ত ব্লাংকেটটা মুড়িয়ে দিয়ে ৷ দরজার লক খুলে দেয়৷ তাকিয়ে দেখে ডক্টর ৷
“ভিতরে আসুন..”
ডক্টর ভিতরে এসে চেয়ার টেনে বসে ঝিনুককে চেকয়াপ করতে লাগলো ৷
” ওহ গড মিস্টার মির্জা আপনার ওয়াইফের তো ভিষন জ্বর ৷ ১০৩ ডিগ্রি ৷ “
” দ্রুত কিছু করুন ডক্টর ৷ আমার ওয়াইফ ভিষন কষ্ট পাচ্ছে ৷ “
ডক্টর ঝিনুককে চেকয়াপ করার সময় ঝিনুককের গলায় হাতে মারের দাগ দেখে বুজতে পারলো জ্বর আসার কারন তবে সমুদ্র মির্জাকে প্রশ্ন করার মতো দুঃসাহস ডক্টরের নেই বিধায় ঝিনুকের শরীলের ব্যাথা কমানোর জন্য ইনজেকশন পুশ করে দেয়৷
“” মিস্টার সমুদ্র মির্জা আপনার ওয়াইফ আগামিকালের ভিতর সুস্থ হয়ে উঠবে কিন্তু ভিষন দূর্বল থাকবে তাই ম্যামের একটু বেশি কেয়ারের প্রয়োজন ৷ আর কোন প্রয়োজন হলে আমাকে জানাবেন এখন আসছি””
” দারান ড্রাইভার আপনাকে পৌছে দিবে””
” ধন্যবাদ””
সমুদ্র ফোন করে ড্রাইভার কে জানিয়ে দেয় ডক্টরকে পৌছে দিতে৷ ডক্টর যেতে সমুদ্র ঝিনুকের পাশে বসে থাকে ৷ সে রাতে ঝিনুকের আর জ্ঞান ফিরে না তবে ঘেমে জ্বর ছেড়ে দেয় ৷ সমুদ্র ঝিনুকের পোশাক পাল্টে দেয় তবে অন্ধকারে৷ পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝিনুক নিজেকে খুব হালকা মনে করে ৷শরীলের ব্যাথাটা নেই বললে চলে৷ ঝিনুক বিছানা থেকে উঠে নিচে নামতে দেখে সমুদ্র ড্রেসিং টেবিলের সামনে দারিয়ে ভিজা চুল হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে শুকিয়ে নিচ্ছে ৷ চুল শুকিয়ে অফিসের ড্রেস পড়ে গলায় টাই বাধতে নিলে ঝিনুক উঠে গিয়ে সমুদ্রের হাত থেকে টাই টা নিয়ে নিজে বেধে দিতে লাগলো৷ সমুদ্র মটেও আশা করেনি তার ঝিনুক এমন কিছু করবে ৷ কিছু একটা ভেবে পরক্ষনে বাকা হাসলো সমুদ্র ৷ ঝিনুকের গলা শুকিয়ে আসছে সমুদ্রের মুখে এমন বাকা হাসি দেখে৷ ঝিনুক সমুদ্রের গাঢ় সবুজ বর্নের চোখ জোড়ার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয় ৷ সমুদ্রের ঠোটে এখন সেই বাকা হাসি যার অর্থ ঝিনুকের জানা নেই ৷ সমুদ্র ঝিনুকের কপালে আলতো করে ঠোটের স্পর্শ দিয়ে বললো ” ফ্রেস হয়ে এসো তারপর নাস্তা করবে ৷ আমি অপেক্ষা করছি৷”
ঝিনুক চুপচাপ ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেস হয়ে বের হয়ে দেখে টেবিলে নাস্তা রাখা ৷ ঝিনুক বিছানায় বসতে সমুদ্র পরোটা সাথে ডিম পোচ নিয়ে ঝিনুককে খাইয়ে দিয়ে বললো” এখন আমাকে খাইয়ে দেও প্রিন্সেস”
সমুদ্রের কথা শুনে চমকে ওঠে ৷ কাপাঁ কাঁপা হাত দিয়ে পরোটা ছিড়ে সমুদ্রের মুখের সামনে ধরে সমুদ্র পরোটার সাথে সাথে ঝিনুকের আঙ্গুলও চেটে খায় ৷ যেটা দেখে ঝিনুকের প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে তবুও মুখে তা প্রকাশ করলো না ৷ সমুদ্র খেতে খেতে ঝিনুককে বললো” প্রিন্সেস বিকেলে রেডি থেকো তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে৷”
ঝিনুক কিছু বললো না শুধু মাথা নাড়ালো৷ ঝিনুক সমুদ্রকে খাইয়ে দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য উঠতে নিলে সমুদ্র বলে” প্লেটে হাত ধুয়ে নেও ৷ আর আমি দুপুরে ফিরবো না একে বিকেলে ফিরবো ৷ দুপুরে ঠিক মতো খেয়ে মেডেসিন খাবে নাহলে ….”
“” খাবো, ঠিক মতো খাবার খাবো আমি “”
” গুড গার্ল ” সমুদ্র প্লেট গুলো নিয়ে বাইরে যেয়ে সারবেন্টের হাতে দিয়ে আবার ভিতরে এসে ফোন ওয়ালেট রুমাল নিয়ে ঝিনুককে জরিয়ে ধরে ঠোটে চুমু দিয়ে বাইরে থেকে লক করে চলে যায়৷ সমুদ্র যেতে ঝিনুক স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে বেলকনিতে গিয়ে দারায়…..
দুপুরে সমুদ্রের নির্দেশ মতো খাবার খেয়ে মেডেসিন খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ৷ বিকেল চারটায় ঘুম ভেঙে যায় ফোনের রিংটোনে ৷ চোখ মেলে তাকিয়ে রিংটোন বাজার উৎস টা খুজে বের করার চেষ্টা করে৷ হঠাৎ বালিশের নিচ থেকে আওয়াজ আসছে ভেবে বালিশ সরিয়ে দেখে সত্যি দামি স্মার্ট ফোন ৷ ফোনের স্কিনে সমুদ্রের মুখটা ভেশে আছে ৷ একবার বেজে কেটে যাওয়ার পর আবার ফোন বেজে ওঠে তখন ভয়ে ভয়ে কল রিসিব করে কানে ধরে ঝিনুক….
“” গুড আফটার নুন প্রিন্সেস ৷ ফ্রেস হয়ে ঝটপট রেডি হয়ে নেও আমি আমি আসছি এক ঘন্টার মধ্যে””
ঝিনুক শুধু হুম বলে কল কেটে দিয়ে ফ্রেস হওয়ার জন্য বেড থেকে নামতে পায়ের দিকে খেয়াল করে দেখে তার পায়ে শিকল দিয়ে বাধা নেই ৷ ঝিনুকের প্রচন্ড খুশি এটা দেখে পরক্ষনে মুখের হাসি মিলিয়ে গেল এটা ভেবে সাইকোটা কি সারপ্রাইজ দিবে…?
ফ্রেস হয়ে কাবার্ড খুলে একটা পেকেট পেল ৷ ঝিনুক পেকেট টা বার করে দেখে তার উপরে ছোট্ট একটা চিরকুটে লেখা ” এটা তোমার জন্য প্রিন্সেস””
ঝিনুকের বুজতে বাকি নেই এটা কার কাজ ৷ সময় নষ্ট না করে ঝটপট পেকেট থেকে কালো রঙের সোনালি পাড়ের শাড়িটা পড়ে নেয় ৷ সাথে এক জোড়া ঝুমকো, কালো কাচেঁর চুড়ি একপাতা কালো টিপ ,কাজল লিপস্টিক ৷
ঝিনুক সেগুলো পড়ে ঝটপট রেডি হয়ে গেল৷ ঘড়ির কাটায় কাটায় পাচঁটা বাজতে ফোনটা আবার বেজে ওঠে ৷ ঝিনুক কল রিসিব করে কানে ধরতে ফোনর ওপাশ থেকে শুনতে পায়” দু’মিনিটের ভিতর বাইরে এসো আমি গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছি”
ঝিনুক আর দারালো না ফোনটা হাতে নিয়ে খোলা চুলে বেরিয়ে গেল রুম থেকে ৷ নিচে নামতে নামতে ভাবতে লাগলো দরজা তো খোলা ছিলো না তাহলে দরজা কি করে খুলে গেল? আর ফোন শাড়ি এগুলো কখন সাইকো টা নিয়ে আসলো? ভাবতে ভাবতে মেইন দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখে…..
.
.
চলবে……..
লিখেছেনঃ ফারহানা ছবি