সাফাদ শান্ত দৃষ্টিতে সমুদ্রর দিকে তাকিয়ে নাক চেপে ধরে উঠে চলে যায়৷ সাফাদ চলে যেতে সমুদ্র দরজায় দুটো লাথি মারতে দরজা ভিতর থেকে খুলে যায়৷ ভিতরে ঢুকে সমুদ্র স্তব্ধ হয়ে যায়….
চারজন মহিলা ডক্টর ঝিনুকের কাটা হাতের রক্ত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দেয়৷ডক্টর ঝিনুকের পায়ে ক্ষত দেখতে পেয়ে পা ক্লিন করে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়৷ সমুদ্র পাগলের মতো বিহেভ করছে৷ ঝিনুকের অন্য হাত ধরে চুমু খেয়ে যাচ্ছে সকলের সামনে ৷ আশরাফ মির্জা আর তার ওয়াইফ সোহিনী মির্জা যে দারিয়ে আছে তা সমুদ্রকে দেখে বোঝার উপায় নেই ৷ আশরাফ মির্জা আর সোহিনী মির্জা ঝিনুকের দিকে জ্ঞান ফেরার অপেক্ষা করছে ৷ অনেকটা রক্ত পড়ে যাওয়ায় ঝিনুক প্রচন্ড দূর্বল থাকায় এখনো সেন্স ফেরেনি ৷
” আমার লিটিল প্রিন্সেসের এখনো জ্ঞান ফিরছে না কেন ডক্টর?””
“” মিস্টার মির্জা আপনার ওয়াইফের শরীর থেকে অনেকটা রক্ত পড়েছে ৷ ভাগ্য ভালো ছিলো হাতের কাটা-টা অতোটা গভীর হয়নি। নাহলে ওনাকে আর বাচাঁনো যেত না ৷ ওনাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছি। উনি আজ পুরো দিন ঘুমাবে। রাতে জ্ঞান ফিরে আসবে৷ আপনারা প্লিজ ওনাকে টেনশন মুক্ত রাখবেন ৷ ওনার মানুষিক অবস্তা অতোটা ভালো নয়৷ “” (প্রথম ডক্টর)
“” দেখেছিস সমুদ্র তোর পাগলামির জন্য মেয়েটা মরতে বসেছিলো ৷ আর ওই দিকে ওর ছোট বোন পূনর্তা বোনের কাছে আসতে না পেরে কেদেঁ কেটে একাকার করে ফেলছে ৷ “”
সমুদ্র রেগে তার মায়ের দিকে তাকাতে মিসেস সোহিনী মির্জা চুপ হয়ে যান৷ সমুদ্র দাঁতে দাঁত চেপে মিসেস সোহিনীকে বলতে লাগলো”” আমার ওয়াইফকে নিয়ে তোমাদের না ভাবলেও চলবে ৷ আমি চাই না আমার ওয়াইফের কাছে আমি ব্যতিত অন্য কেউ থাকুক গট ইট ৷ নাও গেট লষ্ট ৷ “
“”সমুদ্র! তুমি ভুলে যেও না তুমি তোমার মম এর সাথে কথা বলছো “” রেগে বললো সমুদ্রের বাবা আশরাফ মির্জা ৷ সমুদ্র ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ঝিনুকের হাতটা ধরে কাট কাট গলায় বলে উঠলো তাদের ” আই সেইড গেট লষ্ট আদারওয়াইজ আই উইল কিল এ্যাভরি অন ..””
সমুদ্রের কথা শুনে ডক্টর সহ বাকিরা দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেল৷ সবাই বের হতে সমুদ্র দরজা লক করে দিয়ে ঘুমন্ত ঝিনুকের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে ৷ এই মায়া ভরা মুখটা দেখে সমুদ্র তাকে ভালোবেসে ফেলে মুহূর্তে মনে হয় এই সেই মেয়ে যার জন্য ঊনত্রিশ বয়সে কাউকে মনে ধরেনি ৷ এই তার জীবন সাথী হওয়ার উপযোগী ৷ সমুদ্র ঝিনুকের কপালে চুমু দিয়ে ৷ পকেট থেকে ফোন বের কর পিএ রাফিকে কল করে…
“” হ্যালো রাফি””
“” ইয়েস স্যার ৷ নতুন কোন আদেশ আছে?””
“” রিয়াজুল রহমান আর তার ওয়াইফ মায়ার অবস্তা কি?””
“” স্যার এরা সুস্থ আছে ৷ তবে দুজনের হাত পা শরীলের কিছু অংশ পুড়ে গেছে আগুনে ৷ সেরে উঠতে বেশ অনেকটা সময় লাগবে৷ “”
“” এদের বেস্ট ট্রিটমেন্টের ব্যাবস্থা কর রাফি ৷ এদের ট্রিটমেন্টের যেন কোন গাফিলতি না হয়৷””
“” ইয়েস স্যার ৷ “”
“” রাফি দ্রুত খোঁজ নেও কে আমার লিটিল প্রিন্সেসের বাড়িতে আগুন দিয়েছে ? তাকে আমি জ্যান্ত পুড়িয়ে মারবো৷ “”
“” স্যার আমরা খোঁজ চালাচ্ছি কিন্ত কোন ক্লু পাচ্ছি না। ইভেন আসে পাশের সি সি ক্যামেরা গুলো নষ্ট হয়ে আছে ৷ “”
“” আই ডোন্ট নো। তুই কি করে ওই বাস্টার্ডকে আমার সামনে এনে দাঁড় করাবি ৷ সময় মাত্র দু’দিন। এর ভিতরে যদি ওকে খুজে আনতে না পারিস, তাহলে তোকে তোর জীবনের প্রান বায়ু ত্যাগ করতে হবে..””
“” ই,, ইয়েস স্যা,, স্যার..”” ভয়ে ভয়ে বললো রাফি…
কল ডিসকানেক্ট করে সমুদ্র জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলতে লাগলো”” মাই লিটিল প্রিন্সেস আমি তোমার বাবা মা’কে মারি নি। তারা বেঁচে আছে ৷ তবে তোমাকে এটা কখনোই জানতে দিবো না যতোদিন না তুমি আমার আসক্তে আসক্ত হচ্ছো৷ “
” মম ভাই এই সব কী পাগলামো শুরু করেছে ? আজ ভাইয়ের জন্য মেয়েটা মরতে বসেছে ৷ মেয়েটার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিয়ে কি ভাই শান্ত হয়নি? আর কী চায় সে?”” রাগে ফুসতে ফুসতে বললো সাফাদ..
“” হুসস সাফাদ আসতে কথা বল সমুদ্রের কানে কথা গুলো গেলে তোকে আস্ত রাখবে না ৷ ডক্টরের সাথে কথা বলেছিস ?””
“”হ্যা ডক্টর বলেছে মেডেসিন ঠিক মতো খাওয়াতে আর ঝিনুক যেন ভাইয়ের সাথে থাকে ৷ “”
” কিহ !”
“” হ্যা মম ৷ ডক্টরকে ঝিনুকের কথাটা বলতে উনি বলেন মেয়েটার জন্য যদি তার রাগটাকে কন্ট্রোল করতে পারে তাহলে বুঝা যাবে সমুদ্র সুস্থ হয়ে যাবে৷””
“” সাফাদ তাহলে মনে হচ্ছে আমাদের ছেলেটা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে৷ সোহিনী মেয়েটা সুস্থ হয়ে গেলে মেয়েটাকে বুঝিয়ে বলো সবটা…””
“” হ্যা আশরাফ আমি সে আশায় আছি ৷ বউমা হয়তো পারবে আমাদের ছেলেটাকে ঠিক করে দিতে৷ “”
“” মম আমি পূর্নতার সাথে একটু কথা বলে আসছি ৷ “”
“” সাফাদ যাওয়ার সময় খাবারটা নিয়ে যাস গতকাল থেকে মেয়েটা না খেয়ে আছে ৷”
সাফাদ একটা প্লেটে কিছু খাবার নিয়ে গেস্ট রুমের সামনে এসে দরজায় নক করে ৷ বেশ কিছুক্ষন পর পূর্নতা দরজা খুলে দেয়৷ সাফাদ পূর্ণতার লাল ফোলা চোখ দেখে বুঝতে পারে পূর্নতা কেদেঁছেখুব। নয়তো চোখ মুখ এভাবে লাল হতো না৷
“” আপনি?”
” আপনি নাকি গতকাল থেকে কিছু খাননি?”
পূনর্তা তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে সাফাদের সামনে থেকে সরে দারিয়ে বলতে লাগলো” যার মা বাবা আগুনে পুরে ছাই হয়ে গেছে ৷ যার বোনটাকে একটা সাইকো পাগল জানোয়ার জোর করে বিয়ে করে টর্চার করে। তার বোনের গলা দিয়ে আদৌ কোন খাবার নামবে বলে আপনার মনে হয়?””
“” দেখো তোমার অভিমান কষ্ট পাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু তুমি যদি এখন না খেয়ে থাকো তখন তুমিও অসুস্থ হয়ে পড়বে তখন তোমার বোন বেচেঁ থাকবে বলে তোমার মনে হয়? স্যরি তুমি বলে ফেললাম ৷ তুমি বয়সে আমার অনেকটা ছোট তাই…”
“” ইট’স ওকে মিস্টার মির্জা ৷ আপনি এখন আসতে পারেন আমার খিদে নেই৷ “”
সাফাদ মন খারাপ করে চলে যেতে নিলে পূর্নতা বলে উঠলো “” আমার বোনটা বেঁচে আছে তো? ওই জানোয়ারটা আমার আপুটাকে প্রানে মেরে ফেলেনি তো?””
“” ভাবী এখন ঠিক আছে আর ঘুমাচ্ছে৷””
“” আমি একবার আমার আপুকে দেখতে চাই প্লিজ না বলবেন না””
সাফাদ চিন্তায় পড়ে যায় পূর্নতার কথা শুনে ৷ নিজের বড় ভাইকে খুব ভালো করে চেনে সাফাদ ৷ সকালের কান্ড মনে পরে যেতে সাফাদ শুকনো ঢোক গিলে পূর্নতাকে বলে উঠলো “” আমি চেষ্টা করবো তবে কথা দিতে পারছি না ৷ খাবারটা রেখে গেলাম নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে খেতে হবে ৷ আর কিছু বললাম না আসছি৷ “”
সাফাদ খাবারটা রেখে চলে যায় পূর্ণতা ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেস হয়ে খাবারটা খেয়ে নেয়। কারন সাফাদ ঠিক কথা বলেছে নিজের জন্য সুস্থ থাকতে হবে বোনের জন্য সুস্থ থাকতে হবে৷
সন্ধ্যায় ঝিনুকের জ্ঞান ফিরতে মনে হলো কেউ ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আছে ৷ শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে ৷ ঝিনুক একটু নরে উঠতে সমুদ্র উঠে বসে দেখে ঝিনুক চোখ মেলে তার দিকে তাকিয়ে আছে ৷ সমুদ্র ঝিনুকের পুরো মুখে চুমুতে ভিজিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো”” লিটিল প্রিন্সেস তুমি ঠিক আছো তো? কোন কষ্ট হচ্ছে তোমার? আমি এখুনি ডক্টরকে ডাকছি। তুমি চিন্তা করো না। তুমি একদম ঠিক হয়ে যাবে৷ “”
সমুদ্র পাগলের মতো নিজের ফোনটা খুঁজতে লাগলো ৷ বালিশের পাশে ফোনটা পেতে ডক্টরের নম্বরে ডায়াল করে ৷
ঝিনুক এই সমুদ্রকে দেখে অবাক ৷ আগের হিংস্র সমুদ্র আর এখনকার কেয়ারিং সমুদ্রকে দেখে ঘাবড়ে যায় ৷ ঝিনুক মনে মনে ভাবতে লাগলো এটা হয়তো সমুদ্রের জমজ ভাই ৷ নয়তো অন্য কেউ ৷ ঝিনুকের কেন যেন ভীষণ ভয় লাগছে ৷ ঝিনুক হাত নাড়াতে কাটা হাতটা বিছানার কোনায় লেগে ব্যাথা পায় ৷ ঝিনুকের মনে পরে যায় সে নিজেকে শেষ করার জন্য হাতের শিরা কেটে সুইসাইড করার চেষ্টা করেছিলো৷ ঝিনুক ব্যথায় চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে আছে৷ সমুদ্র ঝিনুকের মুখের দিকে তাকিয়ে কাটা হাত আলতো করে ধরে ব্যথা জায়গায় ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে বলতে লাগলো” জান তোমার কি হাতে ব্যাথা করছে? কষ্ট হচ্ছে খুব ? চিন্তা করো না ডক্টর এখুনি আসছে ৷ ” সমুদ্রের কথা শেষ হতে দরজায় নক পড়লো সমুদ্র ঝিনুকের হাতটা বালিশের উপর রেখে দরজা খুলে দেয় ৷ ডক্টর ভয়ার্ত মুখ নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে ঝিনুককে পরিক্ষা করতে থাকে ৷
” মিস্টার মির্জা ম্যাম এখন ঠিক আছে ৷ ঠিক সময়ে মেডেসিন আর রেস্ট নিলে কিছু দিনের ভিতর সুস্থ হয়ে যাবে৷ ম্যামকে কিছু খাইয়ে মেডেসিনটা খাইয়ে দিন””
“” আর কোন প্রব্লেম হবে না তো?”
“” আশা তো করছি হবে না ৷ যদি হয় আমাকে একবার ফোন করবেন আমি চলে আসবো””
“” ওকে এখন আপনি আসতে পারেন৷” ডক্টর তার ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে রুম থেকে ৷ সমুদ্র নিজের হাতে তার লিটিল প্রিন্সেসের জন্য রান্না করার জন্য নিচে কিচেনে যায় ৷ নিজের হাতে রান্না করে ঝিনুকের জন্য উপরে নিয়ে যায় ৷ সমুদ্র রুমে ঢুকতে দেখে ঝিনুক বিছানা থেকে নামার চেষ্টা করছে ৷ এটা দেখে সমুদ্রের রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে গেল ৷ খাবার গুলো টেবিলের উপর শব্দ করে রেখে ঝিনুকের দিকে তাকায় ৷ ঝিনুক তার ব্যান্ডেজ করা পা নিয়ে দাড়াতে আচমকা শব্দ পেয়ে সামনে তাকিয়ে সমুদ্রের রক্ত চক্ষু দেখে ভয়ে কাঁপতে লাগলো …
“” তোমার সাহস দেখে আমি স্পিচলেস লিটিল প্রিন্সেস ৷ “”
“” আ,, আসলে আমি ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য…””
“” শাটআপ ইউ ইডিয়ট ৷ এই ব্যান্ডেজ করা পা নিয়ে ওয়াসরুমে যেতে আমাকে কেন বলোনি? আন্সার মি ড্যাড ইট” রেগে বললো সমুদ্র..
“” আপনি রুমে ছিলেন না তাই..””
“” তাই পাকামো করে একাই যাচ্ছিলে তাই তো?”
ঝিনুক মাথা নাড়ে… তখনি হুট করে সমুদ্র ঝিনুকে কোলে নিয়ে ওয়াসরুমে নিয়ে যায়৷
“” দরজা লাগাবে না আমি বাইরে ওয়েট করছি ৷ হয়ে গেলে আমাকে বলবে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো, গট ইট।”
ঝিনুকের উওরের অপেক্ষা না করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বাইরে দাড়ায়৷ ঝিনুক ফ্রেস হয়ে দরজায় টোকা দিতে সমুদ্র ভিতরে প্রবেশ করে ঝিনুককে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে সামনে প্লেটে সাজানো খাবার গুলো রাখ ৷
খাবার গুলো দেখে ঝিনুকের মনে পরে পূর্ণতার কথা ৷
” পূর্ণ খেয়েছে তো ? কোথায় পূর্ণ ? এই লোকটা ওকেও মেরে ফেলেনি তো?” মনে মনে কথা গুলো আওড়াতে থাকে ঝিনুক ৷ ঝিনুকের ভাবনার ছেদ ঘটে সমুদ্রের রাগি কন্ঠে…
“” কার কথা ভাবছিলে লিটিল প্রিন্সেস ? “”
“” আ,, আমার বোন কোথায়?”
সমুদ্রের কি হলো ঝিনুক বুঝলো না। ঝিনুকের কাটা হাতটা চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে সমুদ্র ঝিনুককে বললো”” তোমার চিন্তা ভাবনায় মন মস্তিষ্কে শরীরের প্রতিটি রক্ত কনিকায় শিরায় উপশিরায় শুধু আমার নাম থাকবে। আরফান সমুদ্র মির্জা। আর কারো কথা চিন্তা ভাবনা করার দ্বিতীয় বার ভুল করবে না লিটিল প্রিন্সেস। তাহলে তাকে চিরদিনের জন্য এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে৷””
ঝিনুক হাতের ব্যাথা তার উপর সমুদ্রের এমন সাইকোদের মতো ব্যাবহার দেখে ঝিনুক আর চুপ থাকতে পারলো না সাহস নিয়ে বলে উঠলো ” হাত ছাড়ুন আপনার মতো খুনি সাইকোর সাথে থাকার আমার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই ৷ আপনার জন্য আমি আমার আপন জনদের হারিয়েছি আপনার জন্য আমি আর আমার ছোট বোন অনাথ হয়েছি ৷ আপনি আমার জীবনে এসে আমার পুরো জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছেন৷ আমাকে জীবিত লাশ বানিয়েছেন আপনি শুধু আপনি ৷ আপনি কারো ভালোবাসা পাওয়া যোগ্য নন। আপনি সবার ঘৃনা পাওয়ার যোগ্য। বুঝতে পেরেছেন আপনি ৷ আপনাকে আমি শুধু ঘৃনা করি শুধু মাত্র ঘৃনা ৷ আপনার মতো সাইকো খুনিকে আমি কোন দিন ভালোবাসবো না। বরং সবটা দিয়ে ঘৃনা করবো আপনাকে আর না আপনার এই রাজত্বে আমাকে বেশিদিন আটকে রাখতে পারবেন আমি ঠিক পালিয়ে যাবো এখান থেকে আপনার থেকে বহু দুরে “”
কথা গুলো ঝিনুক সমুদ্রের চোখে চোখ রেখে বলে ৷ সমুদ্র এক দৃষ্টিতে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে ঝিনুকের সব কথা শুনে রাগে সমুদ্র ঝিনুকের হাত ছুড়ে ফেলে খাবারের প্লেট ফ্লোরে ছুড়ে মারে ৷ কাঁচের প্লেট ফ্লোরে পরে টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে৷ ঝিনুক কথা গুলো বলার সময় মুহূর্তে ভয় সব গায়েব হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু এখন সমুদ্রের হিংস্র রুপ দেখে ভয়টা যেন চেপে ধরেছে তাকে ৷ গলা দিয়ে এখন আর কোন আওয়াজ বের হচ্ছে না ৷ সমুদ্র ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে ওর চুলের মুঠি ধরে মুখের সামনে এনে বলে”” তুমি আমাকে ঘৃনা কর বা ভালোবাসিস তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না ৷ আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তুমি শুধু আমার শুধু আমার ৷ আমার একার ভালোবাসাই যথেষ্ট আমাদের জন্য আমি একাই ভালোবেসে যাবো তোমাকে ৷ আর আমার রাজত্বে তুমি যখন একবার এসে পরেছো তখন তুমি এখান থেকে আর বের হতে পারবে না আমার অনুমতি ব্যাতিত ৷ আর আজ থেকে এই রুম থেকে তোমার বের হওয়া সম্পূর্ন নিষেধ ৷ এই রুমে আমার সাথে থাকবে তুমি৷ আর আজ যেটা করলে তার জন্য তোমাকে পস্তাতে হবে “” কথা গুলো বলে সমুদ্র রুম থেকে বেরিয়ে দরজা লক করে দেয়৷ সমুদ্র যেতে কান্নায় ভেঙে পড়ে ঝিনুক ৷
“” নাহ আমি হার মানবো না৷ আমাকে এই জাহান্নাম থেকে পালাতে হবে ৷ কিন্ত পূর্ণ কোথায়? ওকে আগে খুঁজে বের করতে হবে ৷ ” কথা গুলো বিড়বিড় করে বলতে বলতে হঠাৎ দরজার লক খোলার শব্দ পায় ঝিনুক মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে……
.
.
চলবে……..
লিখেছেনঃ ফারহানা ছবি