সন্ধ্যে বেলার তুমি | পর্বঃ ২
মিসেস মায়া ঝিনুককে নিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে আসতে ঝিনুককে বলা হয় সবাইকে সালাম দিতে। ঝিনুক সালাম দিয়ে সামনে তাকাতে সমুদ্রের দিকে চোখ দুটো আটকে যায়৷ সাথে সাথে মনে পরে যায় সেই ঘটনা ৷ সমুদ্রকে দেখে ঝিনুকের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল ৷ ঝিনুক তার মাকে কিছু বলতে যাবে তার আগে সমুদ্র কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে বলে উঠলো …..”” আগামিকাল বিয়ে হবে আর আমি না শব্দটা শুনতে অভ্যস্ত নই৷”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
সমুদ্রের কথা শুনে ঝিনুকের বাবা রিয়াজুল রহমান ভিষন ভাবে রেগে গেলেন৷ মেয়ে দেখতে এসে এভাবে নিজের মতামত তার মেয়েদের উপর চাপিয়ে দেওয়াটা তিনি ভালো ভাবে নেন নি ৷ ঝিনুকের মা তার স্বামীর মুখ দেখে বুঝতে পারছেন তিনি ভীষণ রেগে আছে ৷ আর যারা সমন্ধ নিয়ে এসেছে তাদের খুব একটা শান্ত নম্র মনে হইনি ৷ অঘটন কিছু ঘটার পূর্বে তিনি বলে উঠলেন”” দেখ বাবা বিয়ে কোন ছেলে খেলা নয় তাই আমাদের সময় দরকার ৷ আমি আমার মেয়ের সাথে কথা বলবো তার পছন্দ অপছন্দ আছে সেটা জানতে হবে তারপর বিয়ে তার আগে আমরা কেউ এই বিয়েটা নিয়ে এগোতে পারবো না “”
ঝিনুক তার মায়ের কথা শুনে স্বস্তির শ্বাস ফেলে সমুদ্রের দিকে তাকাতে ভয় পেয়ে যায় সমুদ্রের লাল চোখ জোড়া দেখে৷ সমুদ্র যেন তার চোখ জোড়া দিয়ে তার মাকে ভস্ম করে দিবে৷ ঝিনুক ভয়ে তার মায়ের হাত শক্ত করে ধরে ৷ সমুদ্রের মা মিসেস সোহিনী মির্জা তার ছেলের মনোভাব বুঝে সমুদ্রের কিছু বলে ওঠার পূর্বে তিনি বলে ওঠেন” দেখুন বেয়াইন আমার ছেলে যখন আপনার মেয়েকে পছন্দ করেছে তখন সমুদ্র আপনার মেয়েকে বিয়ে করবে পৃথিবী এদিক থেকে ওদিক হলেও ঝিনুক মামুনি মির্জা বাড়ির বউ হবে৷ “” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” এবার আপনারা একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন না মিসেস মির্জা?”” রেগে বললো ঝিনুকের বাবা রিয়াজুল রহমান …
“” দেখুন বিয়াই সাহেব আমি আপনাদের সন্মান রক্ষার্থে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি নাহলে এতোক্ষনে আপনার মেয়ে মির্জা বাড়ির বউ হয়ে যেতো৷””
এবার আর ঝিনুকের বাবা রাগ সামলাতে না পেরে বলে ওঠে “” এখুনি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যান ৷ আমি আমার মেয়ে কে কোন সাইকো পাগলের হাতে তুলে দিবো না ৷ আপনি কি ভেবেছিলেন আমি কিচ্ছু জানি না! আপনার ছেলে যে মানুষিক ভাবে অসুস্থ এটা আমি খুব ভালো করে জানি ৷ আমি আমার মেয়েকে কোন পাগলের হাতে তুলে দিবো না ৷ আপনারা অনেক বড় লোক হতে পারেন ক্ষমতা আছে টাকা আছে তাই বলে আমি আমার মেয়ের জীবন শেষ করে দিতে পারবো না ৷ আপনারা দয়া করে আসতে পারেন ৷আর হ্যা যাওয়ার সময় এই মিষ্টি নিয়ে যাবেন৷”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
এতোক্ষন সমুদ্র সবটা দাঁতে দাঁত চেপে সবটা শুনছিলো ৷ রিয়াজুল রহমানের কথা শেষ হতে সমুদ্র লাথি মেরে টি টেবিল ভেঙে ফেলে রিয়াজুল রহমানের গলা চেপে ধরে বলতে লাগলো “” তুই আমার লিটেল প্রিন্সেস কে আমার হতে দিবি না তুই সব নাটের গুরু তাই তো! আজ তোকে আমি শেষ করে আমার লিটিল প্রিন্সেস কে বিয়ে করবো ৷”” সমুদ্র কোমড় থেকে রিভালবার বের করে রিয়াজুলের মাথায় ঠেকাতে ঝিনুক সহ্য করতে না পেরে সমুদ্র কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রিয়াজুল রহমানকে জরিয়ে ধরে সমুদ্রকে বলতে লাগলো”” আ,,আমি বি,,বিয়ে করতে রাজি প্লিজ আমার বাবার কোন ক্ষতি করবেন না”” কাদঁতে কাদঁতে বলতে লাগলো ঝিনুক… সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
সমুদ্রের ঠোটে কোনে হাসি , সমুদ্র ঝিনুকের বাহু ধরে টেনে নিজের সামনে দার করিয়ে ঝিনুকের অনামিকা আঙ্গুলে ডাইমন্ডের একটা রিং পরিয়ে দিয়ে হাতে চুমু দিলো৷ ঝিনুক রোবটের মতো দারিয়ে আছে ৷ সমুদ্র ঝিনুকের সামনে চুল গুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলতে লাগলো”” আজ এই মুহূর্ত থেকে তুমি আমার লিটিল প্রিন্সেস ৷ ভুলেও আঙ্গুল থেকে রিং খোলার চেষ্টা করবে না আগামিকাল আমাদের বিয়ে ততোক্ষন পর্যন্ত তুমি আমার আমানত এদের কাছে ৷”” আড়চোখে ঝিনুকের বাবার দিকে তাকিয়ে বললো সমুদ্র৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” মম ড্যাড বিয়ের প্রস্তুতি নেও ছেলের বউকে ঘরে তোলার জন্য , আর আমি এখানে থাকবো যতোক্ষন বিয়ে টা হচ্ছে..””
“”কিন্তু সমুদ্র এটা ঠিক নয় বিয়ের আগে ছেলে মেয়ে এক বাড়ি থাকাটা..”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” আই ডোন্ট কেয়ার মম ৷ আমি আমার লিটিল প্রিন্সেস কে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না ৷ “”
“” সমুদ্র পাগলামো করো না ফিরে চলো আর কাল বিয়ে হবে না ..”” বিয়ে হবেনা শুনে সমুদ্র আগুন চোখে তার বাবার দিকে তাকাতে আশরাফ মির্জা আবার বলে উঠলো “” না মানে বলছি যে হুট করে সব এরেন্জমেন্ট করতে সামান্য সময় তো লাগবে তাই না ? তাই বিয়েটা পরশু হলে ভালো হবে এটা বুজতে চাইছি” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
ঝিনুক রোবটের মতো দারিয়ে সব টা শুনছে ৷ ঝিনুকের ইচ্ছে করছে হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে কিন্তু এই লোকের সামনে তাও করা যাবে না শেষে কিনা একটা খুনি পাগল সাইকো কে বিয়ে করতে হবে এটা ভেবে ঝিনুকের মরে যেতে ইচ্ছে করছে৷
“” ওকে ফাইন তবে এই একদিন গার্ড থাকবে অল টাইম আমার লিটিল প্রিন্সেস কে পাহারা দেওয়ার জন্য…””
আশরাফ চৌধুরী বেশ অবাক হলেন তার ছেলে প্রথম বার তার কথা শুনলো এটা দেখে.. সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” বাহ মেয়েটা আমার ছেলের জীবনে আসতে না আসতে আমার ছেলেটা বদলাতে শুরু করেছে ৷ এই মেয়ে পারবে আমার ছেলেকে সুস্থ স্বাভাবিক করে তুলতে ৷ ওর হিংস্রতা ওর কঠিনতা থেকে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষে পরিনত করতে পারবে …””
মিসেস সোহিনী মির্জা দামি একটা সোনার হার ঝিনুককে পরিয়ে দিয়ে ঝিনুকের কপালে চুমু দিতে যায় তখনি সমুদ্র এক টানে ঝিনুককে নিজের কাছে টেনে এনে বলে”” ডোন্ট টাচ হার মম ৷ ওকে টাচ করার রাইট শুধু আমার আছে আর কারো না “”
সমুদ্রের এমন কাজে রিয়াজুল রহমান শিওর হয়ে যান যে সমুদ্র কোন সুস্থ স্বাভাবিক ছেলে নয় ৷ কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না কারন যে কোন মুহূর্তে সমুদ্র তার কলিজার টুকরা কে তুলে নিয়ে যেতে পারে আর তাকে আটকানোর ক্ষমতা তার নেই৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
মিসেস মির্জা ঝিনুককের কাছ থেকে দুরে সরে দারিয়ে বলে ” এখন আমরা আসি আগামিকাল ওদের গায়ে হলুদ হবে আর পরের দিন বিয়ে ৷ আপনাদের কিচ্ছু করতে হবে না আমরা শুধু আমাদের মির্জা বাড়ির বড় বউমা কে ঘরে তুলে নিবো ৷ আর বিয়ের ড্রেস অর্নামেন্টস সঠিক সময়ে পেয়ে যাবেন “”
পূর্ণতা এতোক্ষন স্টাচুর মতো দারিয়ে সবটা দেখছিলো সমুদ্র যখন তার বোনের কপালে চুমু দিলো তখন পূর্ণ হাত দিয়ে চোখ ঢেকে বলে “” ছিঃ ছিঃ ছিঃ ছোট বড়দের সামনে কিস করছে আপুকে ৷ বাবা মা তোমরা কিছু বলছো না কেন?””
পূর্ণতার কথা শুনে সাফাদ পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে দেখে একটা পিচ্চি মেয়ে চোখ ঢেকে কথা বলছে৷ রিয়াজুল রহমান জোড়ে ধমক দিয়ে ওঠে পূর্ণতাকে .. সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” পূর্ণ ঝিনুক কে নিয়ে ভিতরে যাও””
পূর্নতা চোখ থেকে হাত সরিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে ঝিনুকের হাত ধরে ভিতরে নিতে গেলে পূর্ণতার মনে হলো তার হাত কেউ শক্ত করে ধরে আছে মনে হচ্ছে হাত টা ভেঙে যাবে ৷ পূর্ণ ঘাড় ঘুড়িয়ে পিছু ফিরে সমুদ্রের রক্ত বর্ণ চোখ দেখে ভয়ে ঝিনুকের হাত ছেড়ে দেয়৷ তখনি সমুদ্র রাগি গলায় বলে ওঠে “” ডোন্ট ট্রাই টু টাচ মাই লিটিল প্রিন্সেস সালিকা “”
“” ও ,, ওকে “” ঢোক গিলে ভয়ে ভয়ে বললো পূর্ণ ৷
সমুদ্র এবার ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো”” আজ যেভাবে তোমায় এখানে রেখে যাচ্ছি ঠিক এমনি যেন বিয়ের দিন তোমাকে পাই মাই লিটিল প্রিন্সেস ..”” ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়লো ঝিনুক…
সমুদ্র ঠোটের কোনে হাসি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল তবে বাইরে পাহারা দেওয়ার জন্য গার্ড রেখে গেছে যাতে এবাড়ি থেকে কেউ যেন বের হতে না পারে ৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
দেখতে দেখতে একটা দিন পার হয়ে গেল ৷ রিয়াজুল রহমান মেয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা না থাকলেও বাধ্য হয় করতে ৷ সে রাতে ঝিনুক তার বাবা মাকে মেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনা টা জানায় ৷ সবটা শুনে ঝিনুকের বাবা প্রচন্ড ঘাবড়ে যায় ৷ সমুদ্র যে সাইকো পাগল এটা জানতো কিন্তু খুনি এটা জানতো না ৷ কোন বাবা মা রাজি হবে না এমন ছেলের হাতে তার মেয়েকে তুলে দিতে রিয়াজুল রহমান তার ব্যাতিক্রম নয় ৷ পূর্নতা দরজায় দারিয়ে সব টা শুনে ৷ ঝিনুক তার মায়ের কোলে মাথা রেখে কেদে যাচ্ছে ৷ সান্তনা দেওয়ার মতো কোন ভাষা নেই কারোর ঝিনুকের মা বাবা দুজনের চোখে পানি ৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
পরের দিন সমুদ্র নিজে এসে ঝিনুক আর পূর্ণতা কে নিয়ে যায় ৷ বড় কমিউনিটি সেন্টারে নিয়ে সেখানকার একটা রুমে দুবোন কে রেখে বিউটিশিয়ানদের পাঠিয়ে দেয়৷ ডার্ক রেড আর ওয়াইট কম্মিনেশনের লেহেঙ্গা সাথে ভাড়ি স্বর্নের গহনা ৷ বিউটিশিয়ানরা সমুদ্রের বলা মতোই সাজিয়ে দেয়৷ সাজানো শেষ হতে সমুদ্র রুমে ডুকে ঝিনুক কে দেখে হ্যা করে তাকিয়ে থাকে ৷ বিউটিশিয়ানরা সমুদ্রকে দেখে মাথা নিচু করে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ৷ যায় না শুধু পূর্ণতা ৷ পূর্ণতার মাথায় হঠাৎ একটা বুদ্ধি আসে হুট করে সমুদ্রের দিকে দাঁত কেলিয়ে বলতে লাগলো “” জিজু আপনি এখানে কেন? জানেন না বিয়ের আগে বর কোনের মুখ দেখতে নেই?”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
কপাল কুচকে পূণর্তার দিকে তাকিয়ে সমুদ্র বললো”” পূর্ণতা রাইট? আমার লিটিল প্রিন্সেস তোমাকে পূর্ন বলে ডাকে তাই আমিও ওই নামে ডাকছি পূর্ণ এখুনি রুম থেকে বেরিয়ে যাও “”
সমুদ্রের কথা শুনে ঝিনুক মুখ খুললো”” না পূর্ণ এই রুম থেকে কোথাও যাবে না ৷ কিছুক্ষন পর তো আপনি আমাকে বিয়ে করবেন ততোক্ষন পর্যন্ত ধৈর্যধারণ করুন..”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
সমুদ্র বাকা হেসে বলতে লাগলো” তা তো অবশ্যই ৷ তখন তুমি আমার অনুমতি ছাড়া কারোর সাথে মেশা তো দুরে থাক কথা বলতে পারবে না কারন আমার ভালোবাসার খাচায় তুমি বন্দিনী ৷””
সমুদ্র রুম থেকে বেরিয়ে গেল রাত দশটা বেজে বিশ মিনিট দশ মিনিটের মধ্যে বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে ৷ পূর্ণতা পাইচারি করতে করতে রুমের ছোট্ট বেলকনিতে চোখ পড়ে ৷ সেখানে গিয়ে উপর থেকে নিচে তাকিয়ে দেখে পিছুনের বাগানে কোন গার্ড নেই পূর্নতা দ্রুত চারটা শাড়ি গিট দিয়ে নিচে নামার রাস্তা বানিয়ে ফেলে পূর্ণতার প্লান মতো ঝিনুক তিনতালার রুম থেকে সাবধানে নেমে দৌড়াতে থাকে ৷ চারিদিকে সমুদ্রের পৌষ্য কুকুর পাহারায় ছিলো ঝিনুক কে দৌড়াতে দেখে পিছু নেয় তার ৷ আর ঝিনুকের পালানোর কথা দুমিনিটের মাথায় সমুদ্রের কানে পৌছে যায় ৷ শুরু হয়ে যায় ধ্বংস লীলা ৷ শহরের বড় বড় বিজনেসম্যানরা সমুদ্রের রাগ সম্পর্কে অবগত বিধায় তারা কিছু বলার সাহস পায়নি ৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
ঝিনুক পালাতে চেয়েও পারেনি ধরা পরে যায় সমুদ্রের কাছে তারপর সেই ফোন কল ঝিনুকের প্রতিবেশি এক আপু কল করে জানায় তাদের বাড়িতে কেউ আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে ৷ সে আগুনে তার বাবা মা পুরে মারা গেছে ৷ কথাটা শোনা মাত্র ঝিনুক জ্ঞান হারিয়ে ফেলে…… সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
ওয়াশরুমের দরজায় পরাপর কয়েকবার নক পরতে ঝিনুক চারি দিকে তাকিয়ে দেখে তার জন্য পোশাক অলরেডি রাখা আছে ৷ ঝিনুক শাড়িটা কোন ভাবে পড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে একটা মেয়ে বিছানায় পা দুলিয়ে আপেল খাচ্ছে ৷ মেয়েটি ঝিনুক কে দেখে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলো “” ডোন্ট বি স্কেয়ার্ড মিষ্টি ভাবি ৷ আমি তোমার অন এন্ড অনলি ননোদিনী আহানা বাট সবাই আহি বলে ডাকে তুমিও ডাকতে পারো ৷ “” আহি ঝিনুকের কাছে আসতে ঝিনুক ভয়ার্থ মুখ নিয়ে দু পা পিছিয়ে যায় তা দেখে আহি বলতে লাগলো”” মিষ্টি ভাবি আমি জানি তুমি কিসের জন্য এতো ভয় পাচ্ছো বাট ট্রাস্ট মি ভাইয়া আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছে তোমাকে রেডি করার জন্য নিচে সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে ৷ “” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
ঝিনুক কোন কথা বললো না পাথরের মতো দারিয়ে আছে ৷ আহি ঝিনুকের হাত ধরে আয়নার সামনে দার করিয়ে শাড়িটা ঠিক ভাবে পরিয়ে দিয়ে হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে ভেজা চুল গুলো শুকিয়ে সুন্দর করে খোপা করে গাজরা লাগিয়ে দিয়ে নাকে ডাইমন্ডের নাকফুল , হাতে স্বর্নের মোটা বালা তারপর একে একে বাকি গহনা পড়াতে লাগলো ৷ তারপর মুখে হালকা সাজে সজ্জ্বিত করে দিলো৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” ওয়াও মিষ্টি ভাবি তোমাকে কি সুন্দর লাগছে দেখো একবার আয়নায় তাকিয়ে..””
আহির কথা ঝিনুকের কান অব্দি পৌছাচ্ছে না ৷ বার বার ঝিনুকের মনে হচ্ছে তার জন্য আজ তার মা বাবা কে আগুনে পুরে মরতে হলো ৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
আহি ঝিনুকের কোন রেসপন্স না পেয়ে বুজতে পারে তার মনের অবস্তা ৷ আর কিছু না বলে আহি ঝিনুক কে নিয়ে নিচে আসতে ৷ ঝিনুক তাকিয়ে দেখে সেদিন যারা তাদের বাড়িতে গিয়েছিলো তারাই আছে আর পূর্ণতা ৷ পূর্ণতাকে জীবিত দেখে ঝিনুক খুশি হয় এটা ভেবে তার ছোট বোনটার কোন ক্ষতি করেনি জানোয়ারটা ৷ সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
পূর্নতা বার বার চোখ মুচছে ৷ ঝিনুকের চোখ বেয়ে পানি পড়ছে ৷ হঠাৎ করে ঝিনুক তার বাহুতে ব্যাথা অনুভব করতে সামনে তাকিয়ে দেখে সমুদ্র রাগি চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে ৷
“” হাউ ডেয়ার ইউ লিটিল প্রিন্সেস ৷ আমার অনুমতি ছাড়া তোমার চোখে পানি আসবে এটা তো আমি মেনে নিবো না ৷ ” সমুদ্র ঝিনুকের চোখ মুছিয়ে দিয়ে কানের কাছে ঠোট জোড়া এনে সমুদ্র বলে ” লিটিল প্রিন্সেস আর কয়েক মিনিটের মধ্যে তুমি শুধু আমার হয়ে যাবে শুধু আমার তারপর আমার থেকে পালিয়ে যেতে তুমি কোন দিন পারবে না আর না সে সাহস তোমার বেঁচে থাকবে… সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
সমুদ্র ঝিনুক কে নিয়ে সোফায় তার পাশে দিয়ে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করতে বলে কিন্তু ঝিনুক পাহরের মতো বসে থাকে ৷ সমুদ্র রেগে ঝিনুকের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বলে”” নিজের একটা ভুলের জন্য নিজের বাবা মা কে হারিয়েছো এখন কি নিজের ছোট বোন টাকে ও হারাতে চাও লিটিল প্রিন্সেস?”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
ঝিনুকের বলার মতো কোন ভাষা নেই পূর্নতার দিকে তাকিয়ে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে দেয়৷ সমুদ্রের মুখে বিজয়ের হাসি তার ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের করতে পেরে৷ অন্যদিকে ঝিনুকের চোখে পানি ৷ সমুদ্র ঝিনুকের হাত ধরতে ঝিনুক সমুদ্রের হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে রুমে গিয়ে দরজা আটকে দেয়৷ সমুদ্র প্রচন্ড ক্ষেপে যায় ঝিনুকের ব্যাবহারে ৷ তেরে যায় উপরে গিয়ে দেখে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ৷ দরজা বন্ধ দেখে সমুদ্রের মনে ভয় হতে লাগলো এটা ভেবে তার লিটিল প্রিন্সেস নিজের কোন ক্ষতি করে ফেলেনি তো ? সমুদ্র তবুও নিজের মনে সাহস নিয়ে দরজায় জোড়ে জোড়ে নক করে বলতে লাগলো
“” লিটিল প্রিন্সেস দরজা খোল নয়তো খুব খারাপ হবে”
ভিতর থেকে কোন শব্দ না পেয়ে সমুদ্র রেগে দরজা ভাঙতে যাবে তখনি সাফাদ সমুদ্র কে আটকে দিয়ে বলে উঠলো..”” কি করছিস ভাই দরজা ভাঙছিস কেন?”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
“” সর সামনে থেকে সাফাদ ওর সাহস কি করে হয় আমার কথা অমান্য করে দরজা বন্ধ করে রাখার? “”
“” ভাই প্লিজ শান্ত হ ৷ তুই কিন্তু ভাবির সাথে জানোয়ারের মতো ব্যাবহার করছি প্লিজ এমন করিস না ৷””
সাফাদের কথা শেষ হতে সমুদ্র সাফাদ কে একটা ঘুশি মারে ছিটকে পরে সাফাদ ৷ রাগে পুরো শরীল জ্বলছে সমুদ্রের ৷
“” সেকেন্ড বার আমার আর আমার লিটিল প্রিন্সেসের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করবি না তাহলে আমি ভুলে যাবো তুই আমার ভাই…”” সন্ধ্যে বেলার তুমি৷
সাফাদ শান্ত দৃষ্টিতে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে নাক চেপে ধরে উঠে চলে যায়৷ সাফাদ চলে যেতে সমুদ্র দরজায় দুটো লাথি মারতে দরজা ভিতর থেকে খুলে যায়৷ ভিতরে ঢুকে সমুদ্র স্তব্ধ হয়ে যায়….
.
.
চলবে……..
লিখেছেনঃ ফারহানা ছবি