আমি গালিবের দিকে তাকাচ্ছি, গালিব আমার দিকে তাকাচ্ছে। মটুর রুমে আছি দুজন। ফ্লুরের মাঝে রক্ত দেখা যাচ্ছে। মটু নাকি মামার সাথে হসপিটালে যাচ্ছে । কিন্তু ওর রুমে রক্ত আসবে কি করে?
–মেঘ ওর ফ্লোরে রক্ত
–এমনো হতে পারে সে ঘটনার পর সেখানে গিয়েছে।আর আহত মামিকে ধরার পর ওর শরীরে লেগেছে।
–দেখ দেখ, একটু দূরে দূরে রক্তের ফোটা।বোঝা যাচ্ছে যে সে রক্ত গুলো মুছতে চেয়েছিলো।
–এবার সন্দেহ জনক।কারন মটু যে রক্তু গুলো মুছতে চেষ্টা করছিলো সেটা স্পষ্ট।তরিঘরি করে সব গুলো রক্ত মুছে শেষ করতে পারেনি।এমন সিচুয়েশনে মানুষের মাথা কাজ করে না। মেঘমিলন
–রাইট।সে যদি কিছু নাই করতো তাহলে রক্ত মুছতে চাইবে কেন?
–দেখতো রক্ত আর কোথায় কোথায় দেখা যায় ?
একটু ভালো করে লক্ষ করলাম ফ্লুরের অনেক যায়গায় রক্ত দেখা যাচ্ছে। আমি আর গালিব পুরো রুম চেক করতে লাগলাম। এক পর্যায়ে ড্রেসিং টেবিলের পিছনে দাঁড়ালো একটা দা দেখতে পেলাম।
–গালিব?
–কি?
–এইদিকে আস?
–কি?
–দেখ?
–ও মাই গড!
–টাচ করিস না। পরে আরেক সমস্যা।
–কয়টা ছবি তুলে রাখি।
–অবশ্যই।
মটুর রুমের দরজা বন্ধ করে আমি আর গালিব চিলেকোঠায় চলে আসলাম। মেঘমিলন
–আমার কি মনে হয় গাবিল, মটু মামিকে আঘাত করার পর বেশি সময় পায়নি। সে রুমে আসার সাথে সাথে কেউ বোদহয় তার দরজার কাছ এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করে উপায়ন্ত না দেখে মামির কাছে যায়।সেখান থেকেই মামা বা কেউ বলে তাদের সাথে হসপিটালে যেতে।
–হুমম। রুমের দরজা পর্যন্ত বন্ধ করার সময় পায়নি।
–কিন্তু তরীর সাথে তার সম্পর্ক কি? গতকাল ছেলেটাকে ঘোম করলো আজকে এতোবড় একটা ঘটনা।
–কি জানি। আচ্ছা মামির হাঁত তো তুই কাটবি বলেছিলি?মটু কাটলো কেন?
–তরীর সাথে নিশ্চয়ই মটুর কোনো কিছুর সম্পর্ক আছে। সে সাধারণ কেউ না।
–হুমম। মেঘমিলন
–আমাকে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মাঠে নামতে হবে। বাবার মৃত্যুর রহস্য আর এই ঘটনার রহস্য বের না করে আর থামছি না।।
–ঠিক।আমাদের উচিৎ সব রহস্য খতিয়ে বের করা। এভাবে সময় নষ্ট করলে পরে কিছুই করতে পারবো না।
পুরো বাড়িতে থমথমে পরিবেশ। ইতিমধ্যে পুলিশ এসে পুরো বাড়ি তল্লাশি করছে।
আমার রুমেও আসলো। কিন্তু কিছুই পেলো না। পুলিশের সাথেই আবার নিচে নামলাম। কয়েকজন পুলিশ মুটুর রুমে ঢুকলো। একটু থমকে গেলাম।এবার বোধহয় মটু ধরা পরবে।
বাম দিকে তাকাতেই আবার থমকে গেলাম। মটু আমার সাথেই দাঁড়িয়ে আছে। তারমানে সে হসপিটালে যায়নি।
পরেরদিন বিকেল বেলা, পরিকল্পনা করে মটুকে চিলেকৌঠায় নিয়ে আসলো গালিব। তারা রুমে প্রবেশ করতেই আমি মটুর মুখে ট্রাংঙ্কুলাইজার মেডিসিনটা স্প্রে করলাম।সে সাথে সাথে নেতিয়ে পড়লো। গালিব খাটের পায়ার সাথে মুটুকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেললো। মেডিসিনটা সকাল বেলা অনেক কষ্টে একটা হসপিটাল থেকে সংগ্রহ করেছি।যাষ্ট এই কাজটার জন্য। তবে সামনে আরো কাজে আসতে পারে। মেঘমিলন
মুখে পানি ছিটিয়ে দিতেই তার ঘুম ভাঙ্গলো।মনে করেছিলাম সে ছুটার জন্য জোরাজোরি করবে।কিন্তু না। সে চুপ করে বসে আছে। আমি টেবিল থেকে প্লাসটা হাতে নিলাম।
আমি বললাম,
–কি নাম তোর সত্যি সত্যি বল,না হয় হাতের নখ সব গুলো উপরে ফেলবো।
–তার আর দরকার নেই।চুপ হয়ে বসেন আমি বলছি।।
–আপসে বললেতো ভালোই।
গালিবকে চোখে ইশারা দিলাম রেকর্ডিং করার জন্য। মটু বললো,
–আরেকটু সামনে এসে রেকর্ডং করেন না হয় স্পষ্ট রেকর্ড হবে না
–তুমি দেখছি একটু এডভান্স। গালিব রেকর্ড বন্ধ কর।
–ঠিক আছে।। এবার বলো তোমার পরিচয়?
–আমার নাম তন্ময়। বাড়ি ঢাকায়।
–তোর উদ্দেশ্য কি?
–তরী আমার আপন বোন। মেঘমিলন
তোমার আম্মু তরীকে চুরি করে নিয়ে এসেছিলো।
–কবে?
–তরীর বয়স যখন ২ মাস তখন।
–তুই জানলি কি করে?
–১৮ বছর আগে আমরা ছিলাম অন্তত গরীব। আমি তখন টোকাই ছিলাম।।তরীর জম্মহয় ২ মাস। এর মাঝেই আম্মু টুকটাক কাজ শুরু করে দেয়। কি করবে বলেন?গরিব মানুষ না খেয়ে থাকতে হবে। তরী আম্মুর পেটে থাকতেই আব্বু তখন নতুন আরেকটা বিয়ে করে অন্য কোথাও চলে যায়। যাইহোক আম্মু হসপিটালে কাজ করতো৷ নতুন বাঁচ্চা কাচ্চা হলে মায়ের বা বাঁচ্চার সেবা যত্ন করতো। ওরা খুশি হয়ে যা দিতো সেটা দিয়েই মা ছেলের সংসার চলতো। একদিন হসপিটাল থেকে একটা বাচ্চা চুরি হয়। সেটা আপনার আসল বোন তরী। আর বর্তমান যাকে তরী হিসেবে জানেন ওর নাম লামিয়া। মেঘমিলন
–আম্মু কিভাবে লামিয়াকে চুরি করলো সেটা বল?
–আপনার বোন যখন হসপিটাল থেকে চুরি হয় তখন আপনার আম্মু প্রায় পাগল পারা হয়ে যায়।তখন তার দৃষ্টি পরে আমার বোন লামিয়ার উপর। তখন লামিয়া ছোট থাকায় আম্মু লামিয়াকে সাথে নিয়ে যেতো। লামিয়া আপনার বোনের থেকে প্রায় ১ মাসের বড় ছিলো। তখন আপনার আম্মু লামিয়াকে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য অফার করে আমার আম্মুকে। কিন্তু আমার আম্মু রাজি হয়নি। তারপর আপনার আম্মু পুরো হসপিটালের ডক্টর নার্স সবাইকে টাকা খাইয়ে অনেক কায়দা করে লামিয়াকে চুরি করে। আম্মু পুলিশের কাছে যায় তবুও কাজ হয়নি।সেখানেও আপনার আম্মু টাকা দিয়ে মুখ মেরে রেখেছিলো।
আমি গালিবের দিকে তাকিয়ে বললাম,
–কত খারাপ মহিলা দেখছিস?
–কিন্তু আমার কেমন যেন লাগছে। এই তরীর ঘটনাটার পিছনে সব রহস্য।
–হুমম।আমারো তাই মনে হচ্ছে। ওর বাঁধন খুলে দে।
–দিচ্ছি।।
–খুব সম্ভবত আব্বু, আম্মুর এই চুরির বিষয়টা মেনে নিতে পারছিলো না।আর এটা নিয়ে ঝগড়া হয় তাদের মাঝে দীর্ঘদিন।এক পর্যায়ে বিষয়টা ডিভোর্স পর্যন্ত যায়৷ মেঘমিলন
–একদম সঠিক অনুমান করেছিস।
–আম্মু আগে থেকেই খারাপ ছিলোরে। এর শাস্তি কিন্তু পেতে হবে আম্মুকে। আচ্ছা তন্ময়, মেঘ সেজে এই বাড়িতে আসার প্লেন কে দেয়?
–আপনার একটা হিটলার বন্ধু আছে না?
–কার কথা বলছিস?
–আর কে?আনাস ভাই।
–দেখেছিস গালিব? আনাস ঠিকিই যায়গায় বসে চাল চেলেছে।সেদিন তাহলে সালা মিথ্যা বলেছে আমাকে।।
–হুমম।
–কিন্তু আনাস কিভাবে জানলো আমার আম্মু তোর বোন লামিয়াকে চুরি করেছে?
–সেটা আমি জানিনা। আমাকে চিঠি পাঠিয়েছিলো সে।
–এই ফোনের যোগে চিঠি? আচ্ছা কি পাঠিয়েছিলো?
–চিঠিতে লিখা ছিলো,
তোমার বোনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।তাকে নিতে ইচ্ছুক হলে এই ঠিকানায় চলে আসো।
ব্যাস আমি চলে গেলাম। সে আমাকে হাতে ধরে ৩ দিন ট্রেনিং দিয়েছিলো এই পুরো বাড়ি সম্পর্কে। মেঘমিলন
–হতেও পারে। কারন আনাস আমার জীবনের
এ টু জেট সব জানে। কিন্তু আনাস এই বাড়ির এই পরিস্থিতি কিভাবে জানলো?
–মেঘ,আমার মনে হয় আমাদের একবার ঢাকায় যাওয়া উচিৎ। ওর সাথে সরাসরি কথা বলা উচিৎ। সে কেন করছে এমন? সব কিছু আমাদের থেকে লুকিয়েই বা করছে কেন?
— যাবো।যাস্ট একটা কাজ এখানে করবো তারপর যাবো।
–আবার কি কাজ?
–কাল সকালে দেখবি।এতো আগে তোকে টেনশন দিয়ে লাভ নেই।
–ওকে।
–আচ্ছা তন্ময় একটা জিনিস মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ছেলেটাকে তুই ঘুম করেছিস?
–হুম। মেঘমিলন
–তুই তাহলে গালিব আর তরীর সম্পর্কের কথা জেনেছিলি?
–আগে জানতাম না। এখানে এসে দেখেছি।
–মামির হাত কাটার প্লেন ছিলো আমার,তুই জানলি কি করে?
–আমি জানিনা আপনিও প্লেন করে রেখেছেন।কিন্তু সেদিন খুব রাগ উঠেছিলো। বোনটা তো আমার।সেদিন ভেবেছিলাম হাত কাঁটবো কেঁটে দিয়েছি।
–এতো মানুষের ভিরে হাত কাঁটার মতো সুযোগ পেলি কোথায়? মেঘমিলন
–আপনার মামি মুন্নীর সাথে বাড়ির চিপায় প্লেন করছিলো আমাকে কিভাবে মেরে ফেলানো যায়। কারন তারা জানে আমি মেঘ। আমি সব শুনেছি। আর আগেও একবার এটাক হয়েছিলো। আনাস ভাই আমাকে একটা স্প্রে দিয়েছিলো যেটা প্রয়োগ করলে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যায় সাথে সাথে। ৪৮ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে এন্ড সুস্থ হতে ১০, ১২ দিন সময় লাগে। সেটা আগে স্প্রে করি। তারপর হাত কেটে দেই।
–বুঝেছি। সব আনাসের আবিষ্কার। ওরে ডক্টর জটকা লাইট বলা যেতে পারে।।
–মেঘ এখন রসিকতার সময় নেই। মেঘমিলন
–ধর্যধর। কাল সকাল থেকে আরেকটা মিশন স্টার্ট করবো। আর হে তন্ময় আমাদের এই কথা গুলো যেন কেউ না জানে। আগে যেমন ছিলি তেমনি সবার সাথে অভিনয় করে যাবি।
–ঠিক আছে। মেঘমিলন
মেঘার মেসেজ আসলো সন্ধ্যা পরে তার সাথে নদীর পারে দেখা করার জন্য। অবশ্য সেটার অপেক্ষায় ছিলাম। খুব চেয়েছিলাম মেঘা এমন কিছু বলুক।মনে হচ্ছে কতদিন দেখিনা পাগলীটাকে। পাগলীটাকে পেতে আমাকে স্ট্রাগল করতে হবে। আচ্ছা সেদিনের সেই স্বপ্নটার মানে কি ছিলো? স্বপ্নটা কি সত্যিই মস্তিস্কের কাজ ছিলো?
–এতোক্ষণ লাগলো আসতে?
–বাড়িতে কিভাবে যে বলে বুঝিয়ে এসেছি।
–এতো রিক্স নেওয়ার কি দরকার ছিলো?
–দূষ তো আপনার,?
–আমার কি দূষ?
–সেদিন যদি যোর না করতেন তাহলে আজকে এমন হতো না।জোর করেই ভালোবাসি কথাটি মুখ থেকে শুনেছেন।
–আমি বলেছি যে আমার সাথে দেখা করো? মেঘমিলন
–আপনি না বলতে পারেন,কিন্তু আমিতো আর পারিনা৷আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো খুব।
–বুড়োকে কি বলে বুঝাবে?
–সেটা আমার৷ চিন্তা। আপনাকে এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
–এখানে বসে থাকবে, নাকি একটু হাঁটাচলা করবে?
–মার্কেটে যাবো?
–শপিং করবে?
–হুম।তবে আমার জন্য নয়।আপনার জন্য।
–মানে? আমার কি কাপড় চোপড় নেই নাকি?
–কেন?
— আমার পছন্দের একটাও নেই। মেঘমিলন
–এতো দামি টি-শার্ট তোমার পছন্দ হয় না?
–এমন মেদা কালারের টি-শার্ট আমাকে ফ্রি দিলেও নিবো না।
–তোমাকে ফ্রি দেয় কে?
–অবশ্য এখন এটা ফেলে দিতে হবে।না হয় এমন অবস্থা করবো কাউকে ফ্রি দিলেও নিবে না।
–কেন?
–আমার পছন্দ না।
–আচ্ছা কাউকে দিয়ে দিবো।
–গুড আইডিয়া।এখন থেকে আমি যেভাবে বলবো সেভাবেই চলবে।
–কখনো না। মেঘমিলন
–সব কিছু তো আর আমার মতো চলতে বলিনি। যাস্ট আমি তোমাকে আমার মনের মতো করে সাজিয়ে রাখবো।
–আমি কি পুতুল?
— আমার কাছে তাই।এসব কালারের পোষাক আমার একদম পছন্দ না।
–আচ্ছা চলো মার্কেটে চলো,তুমি যে রকম পছন্দ করবে সে রকমই পরবো।
–আর হে, শপিং কিন্তু আমি করে দিবো। সেখানে গিয়ে কোনো প্রকার জোরাজোরি চলবে না।
–তাহলো তো ভালোই।এমন গার্লফ্রেন্ড কয়েকজন পায়?
–আমাকে সব মেয়েদের মতো একদম ভাববেন না।
–সব মেয়েদের মতো যদি ভাবতাম তাহলে এই মায়াবতীর প্রেমের জালে ফাসতাম না।
–আপনি কথায় কথায় শুধু মায়াবতী বলেন,মায়াবতী কারা হয় জানেন?মেঘমিলন
–কারা হয়?
–যারা একদম ফর্সা। মুখের মাঝে আছে মাধুর্য। মুখের প্রতিটা ঘঠনে মায়াবি ছাপ।
,–তোমার মাঝে কোনোটার কমতি নেই৷ আমার কাছে এটাই মুগ্ধকর।
— মাঝে মাঝে নিজের প্রতি নিজের হিংসে হয়।
–কেন?
–আপনাম মতো একজন সঙ্গী কি আমি পাওয়ার যোগ্য সেটা ভেবে।
–সেদিন রাতের মতো কি আবার ধরবো?
–না,না।এখনো হাতে ব্যাথা পাই।
–তাহলে সেকেন্ড টাইম যেন এই শব্দ গুলো না শুনি।
–যা সত্যি তাই…
–আবার?
দশ মিনিট যাবৎ মেঘার পিছন পিছন ঘুরছি।সে একটার পর একটা দেখেই যাচ্ছে। এটা আমার কাছে খুব বিরক্তকর।শপিংমলে ঘুরাঘুরি কেমন যেন লাগে। আমার কথা হচ্ছে, দুইটা দেখবো ১ টা কিনবো কাহিনি শেষ। মহিলাদের মতো পুরো দোকান উল্টিয়ে পরে বলে পছন্দ হয়না।অন্য দোকানে যাই।আমি দোকানী হলে এমন কাস্টমার সাইজ করতাম। মেঘা আমার হাতে একটা কালো বডি ফিটিং শার্ট ধরিয়ে দিয়ে বললো, মেঘমিলন
–এটা পড়ে আসো।
–ঠিক আছে মহারানী।
একটু পর,
–একবার আয়নায় দেখোতো কত সুন্দর লাগছে?
–দেখতে হবে না। তুমি বলেছো তাহলেই হবে।
মেঘা আরো অনেককিছু কিনে কাউন্টারে গেলো বিল প্রে করতে। আমি তার সাথেই চুপচাপ দাড়িয়ে আছি। মেঘমিলন
–কত?
কাউন্টারের লোকটি বললো,
–স্বাগতম মেডাম।আপনি ইতি মধ্যে একটা অফার জিতেছেন।
–ওয়াও! কিসের অফার?
–আপনি আমাদের দোকানে আজকে ৪০০ তম কাস্টমার। শর্ত অনুসারে আপনি যা শপিং করেছেন সব ফ্রি।
–আগে বলেন নি কেন?
–সরি মেডাম নিয়ম নেই।
–এই মেঘা? চলোতো। অনেককিছুই তো কিনেছো?
–ঠিক আছে।কিন্তু কি সুযোগটা হাত ছাড়া করলাম ইসস। মেঘমিলন
শপিংমল থেকে বের হয়ে মেঘাকে বললাম,
–আমার মোবাইলটা ফেলে এসেছি।
–হোয়াট?
–১ মিনিট দাঁড়াও।
–তারাতাড়ি যাও।
–ভাই এটিএম কার্ডটা দেন।
–বুদ্ধিটা দাড়ুণ ছিলো।
–শিখে রাখেন কাজে আসবে।
আমি পাশে থাকতে মেঘা বিল প্রে করবে সেটাতো কখনো হতে দিতে পারি না।তাই বুদ্ধি করে দোকানিকে এমন একটা কাহিনী বলতে বলি।বিলতো আমি আগেই প্রে করেছি এটিএম কার্ড দিয়ে রেখেছিলাম দোকানিকে।
–চলুন না ঝালমুড়ি খাই?
–পেট ব্যথা করবে।
–না করবে না।
–কি ছাই পাশ খেতে ইচ্ছে করে? রেস্টুরেন্টে চলো।।
–না।আমি ঝাঁলমুড়ি খাবো।
–আচ্ছা ঠিক আছে।
মেঘাকে নিয়ে আমার দুশ্চিন্তার শেষ নেই।। কি করতে পারি তার জন্য সেটাই ভাবছি। বয়সতো কম হলো না।সঙ্গীনি প্রয়োজন।কিন্তু বুড়োটাকে রাস্তা থেকে দূর করি কিভাবে? একটা বুদ্ধি এসেছে মাথায়।৮০% কাজে আসবে।তবে বুদ্ধিটা কাজে লাগানো অনেকটা টাফ হয়ে পড়বে। ক্ষতি কি ট্রাই করে দেখতে।
পরের দিন সকাল বেলা আমি আর গালিব রওনা হলাম আম্মুর পুরনো পিএস এর বাড়ির উদ্দেশ্যে।সেখান থেকে যাবো পিএ এর বাড়িতে। সেখানে নিশ্চয়ই কিছু না কিছু পাবো।
–গালিব?
–হুমম।
–একটা জিনিস মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
–কি?
–আম্মু লামিয়াকে চুরি করার জন্য এতো জোর দিয়েছিলো কেন?
–সেটা আমিও ভাবছি।
–আমার মনে হচ্ছে আমার বোন তরী চুরি হওয়াটা পুরোটা আম্মুর প্লেন ছিলো।
–কিভাবে?
–কারন একটা মানুষের এতো ছোট বাচ্চা চুরি হওয়ার পর তার স্বাভাবিক হতে কমপক্ষে ১ মাস সময় লাগবে।কিন্তু তন্ময় বলেছিলো আম্মু একটু কান্না কাটির পর স্বাভাবিক ভাবে লামিয়াকে চেয়েছিলো।যা একটা মহিলার এই সিচুয়েশনে একদম অভাবনীয় ব্যাপার।
–ভালো কথা বলেছিস।
–তারপর দেখ,পুরো হসপিটালের লোক সহ থানা-পুলিশ সে নিজের হাতে নিয়ে নেয়। একটা বাচ্চার জন্য সে এতোকিছু করেছ। এর পিছনে রহস্যতো নিশ্চয়ই আছে।
–আচ্ছা তরী জন্ম গ্রহনের আগে কি ফুফার সাথে ফুপির ঝগড়া হতো?
–হুমম।তবে কি নিয়ে হতো সেটা জানতাম না।
–অনেক চিন্তার বিষয়।
–আচ্ছা আমরা আগে গন্তব্যে যাই। ধরেইতো সব তথ্য বের করতে পারবো না।আমাদের ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে।
–হুমম।না হয় সব থেকে আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো।
–আর বেশিদিন লাগবে না।আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব রহস্যের দারপ্রান্তে আছি।
·
·
চলবে……
লিখেছেনঃ নিহান আহমেদ আনিছ