–ভিতরে চল?
–যাবো। একটু ওয়েট কর।
আমি চট করে বেগ থেকে একটু নরমাল ড্রেস গুলো বের পড়ে ফেললাম।
গালিব মুচকি হেসে বললো,
–তোর মতিগতি বোঝা বড় দায়।
–তুই ছোট মানুষ, তোর এতোবুঝে কাজ নেই।
–কোন সময় কোন বিপদে ফেলে দিস সেটা বলা মুসকিল।
–দূর আজাইরা চিন্তা করিস কেন ।চলতো?
পুরো বাড়িতে মেহমানের ছড়াছড়ি। এদের মাঝে কাউকেই আমি চিনি না। নানু,বা মামাদের দেখলে একটু অনুমান করতে পারবো।গালিব আমাকে সবার ছবি দেখাতে চেয়েছে অনেক বার। কিন্ত ইচ্ছে হয়নি দেখার।আমি মানুষটা বেশ অদ্ভুত, যা থেকে একবার অনীহা সৃষ্টি হয়,সেটার প্রতি আকর্ষন তৈরি করতে বেস সময় নেয়। অনেক সময়, সময় নিয়েও কাজ হয় না।
গালিব আমার সাথেই আছে।সে আমার মুখের কোনো প্রশ্ন বোধক বাক্যের অপেক্ষা করছে। আগ বারিয়ে কিছু বলছে না।
মূল দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেই পাশ কাটিয়ে একটা মধ্যে বয়সের লোক গেলো।গালিব আস্তে আস্তে আমাকে বললো,
— আব্বু,আব্বু।
–তোর আব্বু?
–হুমম।
–মেজো মামাকেই চিন্তে পারলাম না!
–নো প্রবলেম ম্যান। আমি চিনিয়ে দিবো।
বাড়িটা দুই তলা।তবে এর দৈর্ঘ এবং প্রস্থ অনেক বড়।বাড়ির সিস্টেম”টা আহসান মঞ্জিলের মতো। তবে আহসান মঞ্জিলের থেকে একটু ছোট। অনেক গুলো ডিজাইন ও ভিন্ন। মামা’রা সবাই কুমিল্লা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে খুলনা এসেছে।এবং সেটা আব্বু আম্মুর ডিভোর্সের পরে।কবে স্থানান্তরিত হয়েছে সঠিক বলতে পারছি না।আর এই বাড়িটা দেখে মনে হচ্ছে অনেক পুরনো। হয়তো নিলামে পেয়েছে, কিনে ফেলেছে।
যাই হোক একটু দূর যেতেই থমকে দাড়ালাম। গালিবের দিকে তাকিয়ে দেখি সে আড়ালে থাকা কাকে যেন ইশারা করে কি যেন বলছে।আমি যে গালিবের দিকে তাকিয়ে আছি সেটা সে লক্ষ করেনি। এবার আড়ালে থাকা মেয়েটা দৃশ্যমান হলো।{ অনেকে ভাবছেন মেঘা হবে, তাই না?}
মেয়েটা অপরিচিত। বয়স ততো একটা বেশি না। তবে ১৭,১৮ তো হবেই। বেস সুন্দর। ফর্সা মুখ। দুজনেই দুজনকে হাতের ইশারায় কি যেন বলছে। গালিব মনে করেছিলো আমি সামনে চলে গিয়েছি। কিন্ত আমি যে তার পাশ ঘেষে দাড়িয়ে আছি সেটা লক্ষ করেনি। আচমকা সে সামনের দিকে পা বাড়াতে আমার সাথে ধাক্কা খেলো। আমি ঘাড় বাকা করে গালিবের দিকে তাকিয়ে আছি। গালিব কেন যেন একটু ভেবাচেকা খেয়ে উঠলো।
–মেয়েটা কে?
— ওহ্ এটা? এটা আমার আম্মুর আব্বুর মেয়ের শাশুড়ীর মেয়ের মেয়ে।
–মাথার তাঁর সব ছিড়েছে তোর। চলতো?
–দাদীকে দেখবি?
–সময় নেই।
–তোর আম্মুকে দেখবি না?
–এতো অস্থীর হচ্ছিস কেন? তোর ফুপি কি এমপি না মিনিস্টার যে তার সঙ্গে দেখা করতেই হবে?
–কাছাকাছি চলে গিয়েছিস। ফুপি এই থানার এমপি।
–ফাইজলামি করিস?
–সত্যি?
–তুই বললেই বিশ্বাস করবো?
–এখানে থাকলেই বুঝতে পারবি।
–আচ্ছা তাহলে আগে বলিস নি কেন?
–তুই আমার কথা আগে কর্ণপাত করেছিস?
–তাহলে আরো ইজি হয়ে গেলো।
–কিভাবে?
–সময় হলে বুঝবি। রুম কোথায় তোর?
–দুইতলায়।
অর্ধেক সিড়ি বেয়ে উঠার পরই বাঁধলো আরেক বিপত্তি। ৬,৭ জন মেয়েও সিরি দিয়ে নামছে। আমি গালিবের পিছনে দাঁড়ালাম। মেয়ে গুলো গালিব কে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লো।আমি অন্য দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছি।
একটা মেয়ে ফিসফিস করে বলছে,
–গালিব ভাই এটা কে?
গালিব আমার দিকে তাকালো। ফেইক পরিচয় দিতে সে ইতস্থ বোধ করছে।আমি গালিবের পেটে খোঁচা দিলাম পরিচয় দেওয়ার জন্য।
–ওহ্,ওটা? সে আমার বন্ধ+ডেকোরেশনের লোক।
মেয়ে গুলো এক সাথে হেঁসে উঠলো।
তাদের মাঝে কেউ একজন আবার ফিসফিস করে বলছে,
–নাম কি তার?
গালিব আমার দিকে তরিৎ গতিতে তাকিয়ে বললো,
–কি যেন নাম তোর?
আমি গালিবের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। এতো নির্বোধ ছেলেটা বলার বাহিরে।একটা ফেইক নাম বললেই তো হয়।
–তুই জানিস না?
–ওহ্ হ্যা মনে পরেছে,ওর নাম মে,মে,মে মিরাজ, মিরাজ, হ্যা মিরাজ।
আরেকটি মেয়ে বলে উঠলো,
–ছাগলের মতো মে মে করছিস কেন? তোর বন্ধুর নাম তোর মনে থাকে না?কেমন বন্ধ তোর?
–আরে আজকে মাত্র পরিচয় হলো।
যাক বাবা কথাটা ঘুরাতে পেরেছে।
–তোর সাথে পরে কথা আছে।ফোন দিলে দেখা করিস।
–ওকে।
মেয়ে গুলো চলে গেলো। আমি গালিবের মাথায় একটা চাটি মারলাম।
–আওউ।
–এতো গাঁদা কেন তুই? আরেকটু হলে তো কেইস খাইয়ে দিচ্ছিলি।
–আরে বেটা মুন্নি আপুকে দেখলে এমনি ডিপ্রেশনে পড়ে যাই।
–মুন্নি আবার কে?
–ঐ যে দেখলি না তুই তুই করে বললো। বড় মামার বড় মেয়ে।
–ডিপ্রেশনে পরে যাস কেন তাহলে?
–আরে সে সব সময়..
গালিব থেমে গেলো।কি ভেবে যেন কথা ঘুড়াতে চেষ্টা করলো,
–আচ্ছা তোর পেটে তো খিদে।
–তুই জানলি কি করে আমার পেটে খিদে?
–এতো দূর জার্নি করে আসলি।চল খাবি।
গালিবের কথায় বেস সন্দেহ হচ্ছে। আমাকে এখনো তার রুমেই নিয়ে যায়নি।কথা ঘুরানোর ছলে সেটা ভুলে গিয়েছে। তাহলে বিষয়টা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে এখন না।
–এই অবস্থায় গিয়েই কি খেতে বসবো?
–ওহ্ সরি, মনেই নেই। চল রুমে চল।
বেশ পরিপাটি একটা রুম।বেচেলার ছেলের রুম সাধারণত এতো গুছানো থাকে না। কে জানে কে গুছিয়ে দেয়?
–গালিব?
–হুমম।
–কেয়ারফুল ম্যান। তুই যে রকমটা করছিস সব কিছু তো শেষ করে দিবি।
–ওকে নো প্রবলেম।
–পেটে সত্যি খিদে লাগছে।
— ওই দিকে বাথরুম।ফ্রেস হয়ে আস।
গালিবের সাথে গিয়ে খাবার টেবিলে বসলাম।
এতো বড় খাবার টেবিল অতীতে কখনো কোনো পরিবারের দেখিনি।সাধারণত যৌথ পরিবার গুলোতে দেখা যায় এরকম টেবিল। তবে এতোবড় টেবিল দেখিনি। কমপক্ষে ৩০+ মানুষ এক সাথে বসে খেতে পারবে।আমাকে আর গালিব কে টেবিলের তুলনায় অতি ক্ষুদ্র দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে সূর্যের তুলনায় পৃথিবী।
–তুই এক মিনিট বস আমি জেঠিমা কে বলছি খাবার দিতে।
–ওকে যা। আমি পকেট থেকে মোবাইল বের করে একটু এদিক সেদিক ঘাটাঘাটি করছি।হঠাৎ লক্ষ করলাম আমার সামনে তরিঘরি করে একটা মধ্য বয়সি মহিলা এসে বসলো।মাথার চুল আধো ঢাকা। একটু ভালো করে লক্ষ করে দেখলাম মিস মারজান বেগম।আমার আম্মু আরকি। সন্তান পিতামাতা থেকে আরো যত দূরেই থাকুক।তাদের চিনতে কখনো ভুল হয় না। ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছে।
–এই নিলিমা?
ওনার পিছনের ঘর থেকে উত্তর আসলো,
–জ্বি খালা?
–প্রচুর খিদা লেগে আছে।
–১ মিনিট।
ওটা বোদ হয় রান্না ঘর। আমি আড় চোখে মিসেস মারাজানা বেগমকে লক্ষ করছি। ওরে বাবাহ্, ওনি এতো ব্যস্ত অপরিচিত একজন তার বিপরীত পাশে বসে আছে সেটা দেখার সময় নেই। এক সময় গালিব এসে আমার পাশে বসলো।
–১ মিনিটের ভিতরে খাবার আসতেছে।
আমি কিছু বললাম না।
হঠাৎ আম্মু ফোন রেখে গালিব কে বলছে,
–কোথায় থাকিস তুই? সন্ধ্যা বেলা খুঁজলাম পেলাম না তো।
–একটা যায়গায় গিয়েছিলাম।
–এটা কে?
–আমার বন্ধ। ডেকেরেশনের লোক।
–তোর আবার ঐ ক্লাসের বন্ধও আছে?
গালিব আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছে। আমার চোখ একদম লাল হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে কোনো রকম কন্ট্রোল করলাম।নাহ্, এটা কোনো সাধারণ মহিলা না।
–যাই হোক নিয়ে এসেছিস কি করার। ভবিষ্যতে সাবধান। এটা ভদ্রলোকের বাড়ি।
আমি দুই হাত বুকে গুটিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। একটা মানুষ এতো নিম্ন মনের হয় কিভাবে? বুঝেছি পাপের নদী পানিতে টুইটুম্বুর হয়েছে। আঙ্গুলের ইশারায় সেই পাপের নদীতে যদি না চুবিয়েছি আমার নামও মেঘ না। ভেবেছিলাম ওনার মাঝে বোধহয় অনুশোচনা জন্মেছে। কিন্তু আমার ধারনা ভুল।
আমি কিছু না বলে উঠে দাড়ালাম।
–কিরে উঠে দাড়ালি যে?
–সব বাড়ির খাবার এই পেটে হজম হয় না।কিছু কিছু বাড়ির খাবার খাওয়ার আগেই পেট নষ্ট হয়ে যায়।।
রাগে কটমট করতে করতে গালিবের রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। গালিব আসলে তাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যেতে হবে। কিন্তু মারজানা বেগমের এতো লুজ কারেক্টার সেটা ধারনা ছিলো না।যখন আব্বুর সাথে সমানে তর্ক দিয়ে কথা বলতো তখন তো বুঝতাম না। তাহলে আব্বুর কোনো দূষ ছিলো না।
এই মাত্র বুঝলাম গন্ডগোলটা কোথায়।
একটু পর গালিব আসলো।
–চলে আসলি যে?
–তোর কি মনে হয় আমি রাস্তার ছেলে?
–আরে দূর, ফুপির কথায় কিছু মনে করিস না।ওনি আগে এমন ছিলো না।
–দেখ গালিব,মারজানা বেগমকে আমি ছোট্ট থেকেই চিনি। আজ আমার এই পরিণতির জন্য দায়ী শুধু তিনি।এমন অবস্থায় ফেলবো, দেখবি তারের মতো সোজা হয়ে গেছে।
–শত হলেও তোর আম্মু।
–নেক্সট টাইম আর এই শব্দটা মুখে না নিলে খুশি হবো। এখন চল কোনো রেস্টুরেন্টে যাই।
–কেন?
–না খেয়ে থাকবো নাকি?
–আচ্ছা চল।
–রুম থেকে বের হলাম। একটু দূর যেতেই প্রথমের সেই মেয়েটা সামনে পড়লো। গালিবকে হাতের ইশারায় কি যেন বলছে। এবার একটু থমকে দাড়ালাম। মেয়েটা বোধহয় বোবা। গালিব আমার দিকে বার বার তাকাচ্ছে কেন সঠিক বুঝতে পারলাম না।
মেয়েটা বিষন্ন মনে চলে গেলো। আমি এবার গালিবকে বললাম,
–কে এটা?
–তরী।
মূহর্তের মাঝেই পুরো শরীরে শিহরন বয়ে গেলো। এটা তরী ছিলো? নিজের অজান্তেই চোখ দু’টো অশ্রুতে ভরে গেলো। কোনো রকম নিজেকে শান্ত করলাম। করুন কন্ঠে বললাম,
–তরী বোবা?
–হুমম। জন্মগত। তুই জানিস না?
–আরে না। যেই সময় আব্বু আম্মুর বিচ্ছেদ হয়,তখন তরী ৪ মাসের শিশু ছিলো।
–বলিস কি? এতো ছোট বাচ্চা কুলে থাকতে তাদের কিভাবে বিচ্ছেদ হলো?
–ওরা মানুষের কাতারে পরে নাকি? একটু আগে কি বললো দেখলি না।
–অবশ্য ঠিক ধরেছিস। ফুপির ব্যবহার একটু উগ্র টাইপের। তবে..
–এই চরিত্রে “তবে” বলে কোনো শব্দ নেই। আমি ওনাকে আগে থেকেই চিনি।
হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির বাহিরে চলে আসলাম গালিব গাড়ি বের করতে গিয়েছে।গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ লক্ষ করলাম একটু দূরে মুন্নী নামের মেয়েটা চার,পাঁচটা ছেলের সাথে কি যেন পরামর্শ করছে।মুন্নীর চেহারায় হতাশা আর ব্যস্ততার ছাঁপ। তবে কথার বলার ভঙ্গিমা বেশ সন্দেহ জনক। আমি গেইটের ভিতর ডুকে দেওয়ালের এই পাশ দিয়ে গেলাম। পকেট থেকে মোবাইল বের করে এমন এটকা ভাব ধরলাম দূর থেকে কেউ দেখলে মনে করবে মোবাইল টিপছি। আমার উদ্দেশ্য দেওয়ালের বিপরীত পাশের কথা বার্তা শুনা। আর দুই কদম এগিয়ে তাদের কথা বার্তা স্পষ্ট শুনতে পেলাম।
মুন্নি বলছে,
–কি বলেছি মনে আছে তো? ওর পরিচয় জানার সাথে সাথে যেভাবেই পারিস খতম করে দিস।
আর বাকি পঞ্চাশ হাজার কাজ শেষে পাবি।
— আরে আপনি কোনো টেনসন লইয়েন না।বেপারটা আমরা দেকতাচি।আপনি সুধু বাকি টেকাটা রেডি রাইখেন,তাইলে অইবো।
–আইএম সিউর সে এখানে আসবে।আমার কাছে খবর আছে সে বাংলাদেশে এসেছে।
–কইলাম তো।ও যদি এহানে নাও আসে,ওরে যেইহানে পামু পরিচয় জানার সাতে সাতে খেইল খতম কইরা দিমু।
–ভেরি গুড।
গালিব ফোন দিচ্ছে বার বার।মনে হয় আমাকে না দেখে চিন্তায় পরে গেছে।
আমি আস্তে আস্তে সেখান থেকে সরে আসলাম।
গালিবের সাথে গাড়িতে বসে আছি।আমি পুরো স্তব্ধ হয়ে আছি। মার্ডারের প্লেনটা যে আমাকে নিয়ে হচ্ছে তা ৭০% সিউর।মনে হচ্ছে ফেইক পরিচয়টাই ছিলো আমার সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ। একটু আগে মারজানা বেগমের অহংকারী রুপটা দেখলাম। তখন যদি তার ছেলে পরিচয় দিতাম তাহলে কিন্তু ঠিকিই মেঘ,মেঘ বলে বিষয়টাকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যেতো। এমন একটা ভাব ধরতো মনে হতো আমার অপেক্ষায় ছিলো। আমার জন্য কেঁদে চোখের কোনো কালো দাগ পরিয়েছে। ফেইক পরিচয় দেওয়াতে বুঝতে পারলাম তিনি কোন অবস্থায় আছে।আর তখন যদি মুন্নির সামনে মিরাজ পরিচয়টা না দিয়ে মেঘ বলতো,তাহলে এতোক্ষণ আমার ডেইড বডি আশেপাশে কোথাও পড়ে থাকতো। এখন আমাকে প্লেন বি হিসেবে কাজ করতে হবে। নকল মেঘ উপস্থিত করতে হবে। আর সেটা কাল সকালের সারপ্রাইজ হিসেবে থাকবে পুরো বাড়ির সবার কাছে। মারজানা বেগমের জীবন থেকে “নিদ্রা” শব্দটা মুছে দিতে হবে।
গালিবের কথায় ধ্যান ভাঙ্গলো,
–ফুপির ব্যবহারে মন খারাপ?
–সেটা অল্প অল্প।
–মন খারাপ করিস না।সব ঠিক হয়ে যাবে।
–শুন গালিব, আমার কাছে মনে হয় “মা” চরিত্রটা স্রষ্টার শ্রেষ্ট সৃষ্টি। মা বাস্তবে যত খারাপ হোক সন্তানকে কখনো বুঝতে দেয় না সে খারাপ।পৃথিবীর সব সন্তানের কাছে তার মা-ই হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ট তম আদর্শ। কেননা সে তার মায়ের গোপনে করা অন্যায় গুলো দেখে না।তার মায়ের মাঝে অহংকার ভাব,হিংসা ভাব তাকলেও সে কিছুই দেখে না।তার কাছে মনে হয় তার মা-ই পৃথিবীর শ্রেষ্ট আদর্শবান মানুষ। কিন্তু আমি এমন একটা অভাগা যে নিজের মায়ের খারাপ রূপ দিনের পর দিন দেখেই যাচ্ছি। কোথায় এর শেষ কে জানে? কোনো দিন কি দেখতে পাবো মায়ের ভালো রূপ? স্রষ্টার কাছে পার্থনা করি পৃথিবীর কোনো সন্তানই যেন মায়ের মমতা মাখা রূপ ছাড়া না অন্য রূপ যেন না দেখে। যতই ঘৃণা করি, এর থেকে কষ্টের বিষয় মনে হয় আর কিছু নেই। কে জানে তরীকে কিভাবে বড় করেছে?
কি জানি বিয়েটা তরীর ইচ্ছে মতো দিচ্ছে কিনা? আমিতো আমার কষ্ট গুলো তকে মুখ ফুটে বলতে পারি, কিন্তু তরী কিভাবে সহ্য করে?সে তো চাইলেও মুখ ফুটে বলতে পারে না।
–তরী ভালো আছে।তুই অযথা চিন্তা করিস না।আচ্ছা তুই কোনো এক সময় বলেছিলি আনাসকে উপস্থিত করাতে পারিস মেঘ সাজিয়ে।সেই প্লেনটা কি করবি?
–হুমম কাল সকালেই আসবে। তবে তার আগে আজকে রাতেই কিছু কাজ করতে হবে।
–আবার কি কাজ?
–মার্কেটে চল। দেখতে পাবি।
·
·
·
চলবে……………………………
লিখেছেনঃ নিহান আহমেদ আনিছ