পরেরদিন……………………..
সবাই রেডি হয়ে প্রস্তুত। তিতাস আর তিতির দুজনেই গাঢ় নীল রং এর পোশাক পড়েছে।
তিতাস নীল রং এর ব্লেজার পড়েছে।ভিতরে হোয়াইট শার্ট পড়েছে।
দেখতে একদম হিরো লাগছিলো।তিতির গাঢ় নীল শাড়ি, সাদা ব্লাউজ,চোখে গাঢ় কাজল,ঠোটে খয়েরী লিপস্টিক, কানে সাদা পাথরের দুল।চুল এক সাইড করে খোপা করা।দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।তিতাস তো দেখেই ফিদা।
তিতাসঃএই মেয়েকি আমায় মারার প্লান করছে।এতো কিউট কেনো লাগছে। ইচ্ছা করছে এখনি গাল দুটোই কিস করে দিয়ে আসি।উফফফ!!(মনে মনে)
তিতিরঃস্যারকে আজ দেখতে জোস লাগছে😍😍 কিন্তু এটা বলা যাবে না বললে পার্ট বেড়ে যাবে।
নীল সাদা রং এর পাঞ্জাবি পড়েছে।চুল সাদা করেছে।আলগা সাদা দাড়ি লাগিয়েছে।প্রিয়া হালকা বাদামী রং এর শাড়ি পড়ছে।চোখে চশমা।সাদা চুল।
আকাশ আর শুভ নরমাল শার্ট পড়েছে।জিন্স প্যান্ট।
সবাই যাওয়ার জন্য তৈরী।
আফতাবঃআর ইউ অল রেডি গাইস?
ইয়েস স্যার।
…ওকে।আজ শামীমের মেয়ের বিয়ে।আমি চায় না কোনো ঝামেলা হোক।তাই তোমরা যাবা।মেহমান এর মতো আচরণ করবা।কিন্তু চারদিকে নজর রাখবা।ওর মেয়ের বিদায় হওয়ার পর ও নিজেই ব্লু প্রিন্ট দিয়ে দিবে তোমাদের।ইজ দ্যাট ক্লিয়ার।
ইয়েস স্যার!!!!
সবাই গাড়িতে উঠে পড়লো।
শুভ আর আকাশ সামনে বসেছে।
আকাশ গাড়ি চালাচ্ছে।শুভ মোবাইলে কাজ করছে।
মাঝের সিটে তিতির আর তিতাস বসেছে।
আর পিছনে নীল আর প্রিয়া।
সবাই বিয়ে বাড়িতে পৌছে গেলো।
গাড়ি থেকে নামলো।
তিতাসঃগাইস সবাই সাবধানে কাজ করবা যাতে আমাদের উপর কারোর সন্দেহ না হয়।
জি স্যার!!
সবাই বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো।
প্রিয়া নরমালভাবে হাটছিলো।
নীলঃঐ প্রিয়া এভাবে কেনো হাটছো?
প্রিয়াঃকিভাবে হাটলাম???
নীলঃতুমি ৬০ বছরের বুড়ি। একটু নরম করে হাটো।যেভাবে হাটছো মনে হচ্ছে র্যাম্প ওয়াক করছো😡😡
প্রিয়াঃউপপপসসস সরি।আসলে ভুলে গেছিলাম।
নীলঃহুমমমমম
প্রিয়া একটু কুজো হয়ে হাটতে লাগলো।
শুভঃ কি হলো আকাশ ভাই তোমার কি হলো এভাবে হাটছো কেনো?
আকাশঃকি আর বলবো আজ অনেকদিন পর জিন্স পড়েছি।বেশি টাইট হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।
শুভঃ😂😂😂😂😂😂😂।
আকাশঃ😒😒😒😒😒হয়সে বেশি হাসিস না।
সবাই ভিতরে ঢুকলো।
শামীমঃআরে আসো আসো।তোমরা এসেছো।
আমি কতক্ষন অপেক্ষা করছিলাম।
তিতাসঃআসসালামু আলাইকুম আংকেল ভালো আছেন।
শামীমঃআমি তো ভালো।ইনি হলো তোমাদের আন্টি।
তিতাসঃআসসালামু আলাইকুম৷
পারভীনঃওয়ালাইকুম আসসালাম।ভালো আছো তোমরা।
তিতাসঃজি। এরপর তিতাস পারভীন বেগমকে নকল পরিচয় দিয়ে সকলকে পরিচয় করালো।
পারভীনঃবাহ!!তিতাস তোমার বৌ তো দেখতে ভারী মিষ্টি। (তিতিরকে ধরে)
তিতাস হাসলো।তিতির একটু লজ্জা পেলো।
পারভীন প্রিয়ার কাছে গেলো।
কেমন আছেন ভাবি।
প্রিয়াঃখুব ভালো আন…..উহু উহু উহু আপা। খুব ভালো আছি।
পারভীনঃআপনারা ভিতরে আসুন।
সবাই ঢুকলো।
সবাই খুব সাধারণভাবে আচরণ করলো।খাওয়া দাওয়ার ও করলো।
বিয়ে প্রায় শেষের দিকে। এখন বিদায় এর পালা।সবাই কান্না করছে।
তমা(বউ) অনেক কান্না করছে। সবার মন খারাপ।
আকাশ,প্রিয়া,নীল,শুভ,তিতির,তিতাস সবাই মন খারাপ।তারাও তো মানুষ কষ্ট তাদেরও লাগছে।
আকাশঃজানো প্রিয়া তোমার ভাবির সাথে যখন বিয়ে হলো।বিদায়ের সময় তার কি কান্না। মনে হচ্ছিলো আমি তাকে কিডন্যাপ করেছি।সারা রাস্তায় কেঁদেছিলো।আর আমি টিস্যু দিচ্ছিলাম।আকাশ এর মুখে মুচকি হাসি।
তিতির বিদায় দেখছিলো হটাৎ নাক টানার শব্দ পেলো পিছনে পাশে তাকিয়ে দেখে তিতির কান্না করছে।ওর নাকটা লাল হয়ে গেছে।চেখের পাপড়িতো এক ফোটা জল জমেছে।কি অপূর্ব লাগছে।কিন্তু তিতাস তিতির এর চোখে জল দেখতে পারছিলো না।অজান্তেই তিতাস তিতির এর হাত ধরলো।তিতির তিতাস এর দিকে তাকালে তিতাস চোখ দিয়ে তাকে আশ্বাস দিলো আর শক্ত করে হাতটা চেপে ধরলো।তিতিরও কিছু বললো না।
বিদায় হয়ে গেলো। একে একে সব মেহমান চলে গেলো।
শামীম নিজের চোখের জল মুছে বললো।
তোমরা দাড়াও আমি ব্লু প্রিন্ট দিচ্ছি।
তিতিরঃস্যার আমি আর শুভ ওনার সাথে যায় আপনারা থাকুন।
তিতাসঃ,ওকে।
শুভ আর তিতির শামীম সাহেব এর সাথে চলে গেলো।
সবাই বাইরে অপেক্ষা করছে।
অনেকটা সময় গেলো কিন্তু কেউ আসছেনা।
তিতাসঃঅনেকটা সময় তো হলো ওরা আসছেনা কেনো।
প্রিয়াঃস্যার আমি গিয়ে দেখে আসবো?
তিতাসঃনা আমি যাচ্ছি।
তিতাস চলে গেলো।
রুমের দরজা খোলা তিতাস রুমে ঢুকলো আর যা দেখলো তাতে সে অবাক।কারন মেঝেতে শামীম সাহেব আর শুভ পড়ে আছে অজ্ঞান অবস্থায়।
তিতাস দৌড়ে ওদের কাছে গেলো।
তিতাসঃস্যার উঠুন স্যার।শুভ ওয়েক আপ শুভ!!
হটাৎ পিছন থেকে কে যেনো তিতাস মাথার উপর গুলি ঠেকালো।
তিতাস থমকে গেলো।
হ্যান্ডসআপ অফিসার তিতাস।
আওয়াজটি শুনে তিতাস চমকে গেলো।
আবার মানুষটি বললো।
কি হলো কথা কানে যায় না?।তিতাস ধীরে ধীরে হাত উঠালো আর ঘুরে তাকালো।
যাকে দেখলো তাতে তিতাস এর পুরো পৃথিবী উলট পালট হয়ে গেলো।
কারন গুলির মালিক আর কেউ নয় তিতির!!!!!!.
তিতিরঃকি হলো স্যার আপনি মনে হয় শক খেয়েছেন।।তিতাসঃতিতির???(অবাক হয়ে)
তিতিরঃজি স্যার।চলুন বাইরে।চলুন চলুন।
তিতির গুলির উপর তিতাসকে বাইরে আনলো।
বাইরে গিয়ে তিতাস আরো অবাক কারন প্রিয়া,নীল,আকাশ সবার উপর কালো পোশাকধারী লোকেরা গুলি ধরে আছে।
তিতির তিতাসকে বাইরে আনলো।
তিতিরকে এভাবে দেখে সবাই অবাক।
প্রিয়াঃতিতির তুই??
আকাশঃতিতির তুমি এটা কি করছো
নীলঃতারমানে তুমি ছিলে সে বেইমান যে সব খবর ডেভলকে দিতে।
তিতিরঃএকদম ঠিক বলেছো নীল।বাট অনেক দেরি হয়ে গেছে।অনেক লেটে জেনেছো।
তিতাসঃকেনো করলে এমন তুমি কেনো???????(চিৎকার দিয়ে)
তিতিরঃআস্তে স্যার।এতো চিল্লাচ্ছেন কেনো।
বলছি তো।ঐ এদিকে আয়।একটু স্যার এর মাথার উপর গুলিটা ধর। আমি ওদেরকে কাহিনীটা বলি।বেচারারা অনেক কনফিউস।
একটা লোক এসে তিতাস এর উপর বন্দুক ধরলো।তিতির মাঝখানে আসলো।
তিতিরঃউমমমম আপনাদের মাথা ঘুরছে তাই না।কি হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছেন না তাই না?
আমি বলছি।
আমি সিবিআইতে জয়েন্ট করেছি ৩বছর হলো। কত কেস সলভ করলাম কত প্রাণ বাচালাম।কত মানুষের জীবন সুন্দর করলাম।কিন্তু সিবিআই আমাকে কি দিলো?বলেন কি দিলো?দু একটা মেডেল আর সার্টিফিকেট।আর কিছুনা। সিবিআই এর জবে নাম মাত্র কিছু বেতন!!কি হয় তাতে আমার টাকার দরকার ছিলো অনেক টাকা!আমি আমার স্বপ্নের বাড়ি করবো, সুখে শান্তিতে থাকবো এটাই আমার মূল লক্ষ্য ছিলো।আর ডেভিল আমাকে আমার সপ্ন পূরণ করার সুযোগ দিলো।আমাকে বললো আমি যদি ইনফরমেশন দি তাহলে টাকা আমার।আর আমি তাই করলাম।ভালো করেছি না😂😂😂😂😂😂😂😂😂😂😂
তিতিরঃসামান্য কয়টা টাকার জন্য নিজের ঈমান বিক্রি করলে।
আকাশঃছিহহহহ তিতির কেমনে করতে পারলে এটি।
প্রিয়াঃতুই তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলি তুই কি করে?
তিতিরঃঐ হয়ছে আর শুনতে চাই না তোমাদের কথা সে কখন থেকে পাকাচ্ছে। এখন তোমাদের চুপ করাচ্ছি। তোমাদের প্রিয়া বন্ধু শুভ আর শামীম সাহেবকে অলরেডি শেষ করেছি এবার তোমাদের পালা।
তিতির গুলি টেনে আকাশ এর উপর ধরলো আর বললো বাই বাই আকাশ ভাই বলে আকাশকে গুলি করলো
বাকিরা সবাই চিললিয়ে উঠলো।আকাশ এর দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।এরপর তিতির নীলকে গুলি করলো।
তিতির প্রিয়ার সামনে গেলো সরি রে,কি করবো বল করতে হচ্ছে। লাভ ইউ সোনা বলে প্রিয়াকে গুলি করলো।প্রিয়া পড়ে গেলো।
তিতির তিতাস এর কাছে গেলো।
স্যার কি হলো কি দেখছেন?.
….দেখছি মানুষ এতো নিচ কি করে হয়?
হয় স্যার হয় যেমন আমি হাহাহা।সরি স্যার আপনাকেও মারতে হবে।হেপি জার্নি।উম্মাহ 😚
বলে তিতাস এর বুকে গুলি করলো আর সঙে সঙে রক্ত পড়তে লাগলো তিতাস এর চোখে জল।রক্তাক্ত দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
তিতির হালকা হেসে গুলি পকেটে ঢুকিয়ে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
গাড়িতে উঠে পড়লো।
কাকে যেনো ফোন করলো “আমি আসছি।”
ফোন রেখে জানালার বাইরে তাকালো।
ওর মুখে এক শয়তানি হাসি।
.
.
চলবে……………..
লিখেছেনঃ নিলাঞ্জনা রহমান