তিতাস গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু কেমন জানি ব্যাথা লাগছে।
তিতাসঃকা..কাকে ভ..ভালোবাসো?(কাপা কাপা কণ্ঠে)
তিতিরঃস্যার আসলে না ওর নাম বলতে লজ্জা লাগছে🙈🙈🙈🙈।তিতাসঃতবুও বলো। আমিও শুনে দেখি।(অনেক কষ্টে কথা বলছে)
তিতিরঃবলতাম?
তিতাসঃহুমমম
তিতিরঃঠিক আছে। তার নাম হলো..
তিতাসঃহুমম??
তিতিরঃতার নাম হলো ভূতত!!😂😂😂😂
তিতাসঃমানে???(অবাক হয়ে)
তিতির হেসেই যাচ্ছে। 😂😂
তিতাস বুঝতে পারলো তিতির মজা করছে।।তিতাসঃতিতির!!!!
তিতিরঃসরি,সরি স্যার কি করবো বলেন আপনি এমন প্রশ্ন করলেন যে তাই। আসলে স্যার আমার দ্বারা প্রেম ট্রেম হবে না।আপনি তো বলেন আমি বাচাল পাগলি মেয়ে আমাকে ভালোবাসবে এমন কেউ নেই।আর আমিও এসব ভাবি না।
তিতাসঃতোমার মতো বাচাল,পাগলি মেয়েকে নিয়ে আর কেউ না ভাবলেও আমি ভাবি৷ কেনো ভাবি তা জানি না তবে ভাবি।(মনে মনে)
তিতাস গাড়ি চালাচ্ছে। আর তিতির বাইরে তাকিয়ে আছে৷ আর ভাবছে
তিতিরঃআমার এমন কেনো মনে হচ্ছে প্রিয়া মিথ্যা বলেছে।ও অন্য কোথাও গেছে মনে হচ্ছে। নাকি আমি বেশি বেশি ভাবছি।
তিতাসঃতিতির!! তিতির!!!!!
তিতাস এর ডাকে তিতির এর ধ্যান ভাঙে।
তিতিরঃজি স্যার।
তিতাসঃতোমার বাসায় চলে এসেছি।
তিতিরঃওহহহ সরি খেয়াল করিনি । ওকে স্যার ধন্যবাদ স্যার। বাই।
তিতাসঃহুমম বাই।
তিতির চলে গেলো।তিতাস তিতির এর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে।
তিতির খুব গভীর চিন্তায় মগ্ন যদি একবার পিছনে তাকাতো তাহলে দেখতো একজন তার পিছনে তাকানোর অপেক্ষায় আছে।
তিতির ঢুকে গেলো। তিতাসও চলে গেলো।
পরেরদিন……………………………
তিতির অফিসে ঢুকলো। সবাই যে যার মতো কাজ করছে। তিতির আকাশ এর কাছে গেলো।
আকাশ ভাই কেমন আছেন?
আকাশঃঐ তো ভালো। আজকে ম্যাডাম গাজরের হালুয়া বানিয়েছে তোমার তো প্রিয়। তাই তোমার জন্যও দিয়েছে
তিতিরঃকি বলেন!!!আসলে ভাবি আমাকে অনেক আদর করে।😁😁😁
আকাশঃ☺☺☺
তিতির ঃতার ডেস্কে গেলো।।তিতির আর প্রিয়ার ডেস্ক পাশাপাশি ।
তিতিরঃপ্রিয়া। কিরে কেমন আছিস।
প্রিয়াঃঐ তো আছি
তিতিরঃকাল আপুর বাসায় কেমন লাগলো।
প্রিয়াঃআ…. আপুর ব..বাসায়? কি আর হবে ভালো লেগেছে।কথা বললাম, ম..মজা করলাম আর কি?😅😅।
তিতিরঃহুমমম।আমার কেনো মনে হচ্ছে প্রিয়া,মিথ্যা বলছে।
তিতির তার কাজে মনোযোগ দিলো।
বিকালে…….
তিতির আর শুভ ফাইল নিয়ে কাজ করছে।
তিতিরঃকি হলো আজ নীল কেনো আসলো না?
শুভঃ ও কে ফোন করে ছিলাম। বললো হটাৎ শরীর খারাপ লাগছে তাই আসছে না।
তিতিরঃকিছু সিরিয়াস?
শুভঃবললো তো তেমন কিছু না। হালকা মাথা ব্যাথা। তবুও আমি পারলে দেখে আসবো।
তিতিরঃহুমমম।
আবার কাজে মনোযোগ দিলো।
২দিন পর…………………
আফতাব পিয়নকে ফোন করলো
আফতাবঃহ্যালো।টিম 6 কে ১০ মিনিট এর মধ্যে কনফারেন্স রুমে আসতে বলো।
১০মিনিট পর……………..
সবাই রুমে উপস্থিত।
আফতাবঃহ্যালো গাইস।(রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
সবাই ঃহ্যালো স্যার।
আফতাব প্রজেকটর এ একটা ছবি দেখালো।
আফতাবঃএটা হলো আমাদের দেশের কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। যা এতোদিন জাদুঘরে ছিলো।কিন্ত জাদুঘর এর কিছু নির্মান কাজ চলছে যার কারনে এসব জিনিস অন্য এক জায়গায় শিফট করা হচ্ছে। আর এ শিফট করার সময় আমাদের টিম এগুলোকে নিরাপত্তা দিবে। এখানে প্রায় ৫০ কোটি টাকার জিনিস আছে। আর আমি ভুল না হলে ডেভিল এর টিম এসব জিনিস চুরি করতে আসতে পারে তাই আমি চাই যাতে তোমরা নিরাপদে এর ট্রাকটি নির্দিষ্ট স্থানে পৌছাতে কাজ করো। এই ট্রাকটি যাতে ঠিক জায়গায় পৌছে তা তোমাদের দায়িত্ব।
ইয়েস স্যার।!!!
তিতাসঃস্যার আমার একটা প্লান আছে।
আফতাবঃহুমম বলো।
তিতাসঃস্যার আমরা একি রকম দুটি ট্রাক নিবো৷ একটিতে আসল মাল আরেকটি ফাঁকা। আমি যদি ঠিক হই ডেভিল এর লোক আমাদের ট্রাক এর উপর নজর রাখতে পারে।তাই আকাশ,শুভ আর প্রিয়া একটা ট্রাক, যেটিতে কোনো মাল থাকবেনা তা নিয়ে সামনে দিয়ে বের হয়ে চলে যাবে।আর আমি,নীল,তিতির আসল ট্রাক নিয়ে পিছন দিয়ে যাব।এতে আমরা সেফলি যেতে পারবো।কারন ওরা তো নকল ট্রাক এর পিছনে থাকবে। আর আমরা আমাদের কাজ করে ফেলবো।
আফতাবঃগুড আইডিয়া।এটা করা যায়। তাহলে সব আমি মেনেজ করে দিবো।আর কালকেই আমাদের মিশন হবে।আর এই প্লান যাতে আর কেউ না জানে।
ইয়েস স্যার।
আফতাবঃমিটিং ইস ওভার!!
আফতাব চলে গেলো।
বাকিরাও যার যার কাজে চলে গেলো।
পরেরদিন……………..
সবাই মিশন এর জন্য রেডি হচ্ছে। সব ঠিক ঠাক করছে।
তিতির গুলি চেক করে পকেটে রাখলো।
তিতিরঃশুভ???ও কোণায় দাড়িয়ে কি করছে?
মনে হচ্ছে কারো সাথে কথা বলছে।
তিতির শুভর কাছে গেলো।
শুভঃ আমি বুঝেছি। এখন রাখছি।
শুভ ফোন রেখে পিছনে তাকাতেই ভয় পেলো।
শুভঃ তি..তিতির তু…তুমি?
তিতিরঃহুমমম আমি।কার সাথে কথা বলছিলে??
শুভঃআ…আমি??আসলে আসলে এক বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম।
তিতিরঃতা ঠিক আছে কিন্তু কোণায় এসে কেনো কথা বলছো?
শুভঃ আরে ঐ দিকে নেটওয়ার্ক ছিলো না তাই এদিকে এসেছি।আর তুমিও কি শুরু করলা।তদন্ত শেষ করে চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে।
শুভ চলে গেলো।
তিতিরঃ কিন্তু ঐ দিকে নেটওয়ার্ক তো ঠিক আছে।কি হচ্ছে এসব??
তিতির আর ভাবলোনা ট্রাকে বসে পড়লো।দুই ট্রাকে সবাই বসে গেলো।
প্রথমে প্রিয়াদের ট্রাক চলে গেলো।আর পিছন দিয়ে তিতাসদের ট্রাক।
তিতাসদের ট্রাক চলছে।তিতির ট্যাব এ কাজ করছে । প্রায় ১ঘন্টা ট্রাক চালানোর পর তিতাস ট্রাক থামালো।
হটাৎ গাড়ি থামানোর কারনে নীল জিজ্ঞাসা করলো স্যার কি হয়েছে?
তিতিাস সামনে তাকাতে বললো।
সবাই সামনে তাকালো দেখলো একজন পুরুষ আর মহিলা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
তিতিরঃস্যার!!!
তিতাসঃজলদি নামো। আমাদের ওদের হেল্প করতে হবে।
ওরা তিনজন নেমে গেলো।
তিতাস পুরুষ এর কাছে আর তিতির মহিলার কাছে গিয়ে তাদের দেখতে লাগলো।
নীল গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো।
তিতাস আর তিতির ঐ দুজনকে দেখতে লাগছিলো হটাৎ দুজনেই একসাথে তিতির আর তিতাস এর মুখে কি একটা স্প্রে করে দে।তিতির আর তিতাস বাঁচবার চেষ্টা করলেও পারেনি। আর বেহুশ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে।
ঐ দিকে নীল এসব দেখে আসতে লাগলে পিছন থেকে কে যেনো তার মুখেও স্প্রে করে দে আর নীলও বেহুশ হয়ে যায়।
মুখের উপর ঠান্ডা পানি পড়তে তিতাস এর হুশ আসে।আস্তে আস্তে চোখ খুলে।
মাথা খুব ব্যাথা হচ্ছে । তিতাস সামনে তাকিয়ে দেখে নীল আর তিতির এর ও সেম অবস্থা। পাশে তাকিয়ে দেখে প্রিয়া তার পাশে।শুভ আর আকাশও আছে।
তিতাসঃতোমরা এখানে??
প্রিয়াঃস্যার আমরা অনেকক্ষন ধরে আপনাদের সাথে যোগাযোগ করার ট্রাই করছিলাম কিন্তু পারছিলাম না তাই আপানাদের মোবাইল ট্র্যাক করে এখানে এসেছি। আর এখানে এসেই দেখি ট্রাক নেই।শুধু এই চিঠিটা পেয়েছি।
তিতাস প্রিয়ার হাত থেকে চিঠিটা নিলে।
প্রিন্ট করা চিঠি।
তিতাস পড়তে লাগলো…..
“হ্যালো টিম6। কেমন দিলাম।মজা লাগছে তাই না।তোমাদের এতো ভালো একটা প্লান আমি নষ্ট করে দিয়েছি। সো সরি!!কিন্তু কি করবো বলো ৫০কোটি তো কম না। তাই কিভাবে যেতে দি বলো।তাই তোমাদের কষ্ট দিলাম।মাথা ঘুরাচ্ছে তাই না?,যাও লেবুর শরবত খেও ঠিক হয়ে যাবে। বাই!!!
ইউর লাভিং
ডেভিল😉😉😉
ড্যাম ইট!!!!(চিৎকার দিলো তিতাস)
পরেরদিন সকালে………..
কনফারেন্স রুমে………….
সবাই চুপচাপ বসে আছে। সবার মুখে হতাশা।
তিতির এর মাথা এখনো ব্যাথা করছে।নীল এর মাথায় হাত।আকাশ টেবিলের উপর থাকা গ্লোবটি ঘুরাচ্ছে।প্রিয়া আর শুভ মুখে হাত দিয়ে ভাবছে।আর তিয়াস ঘটে যাওয়া কথা ভাবছে।
আফতাব আসলো।
সবাই দাড়িয়ে গেলো।
আফতাব এর চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার মাথা খুবই গরম হয়ে আছে।
আফতাব এসেই নিউসপেপারটা টেবিলে ছুড়ে মারলো।
আফতাবঃদেখো কি লিখেছে এই রিপোর্টাররা।আমরা নাকি ঠিক মতো কাজ করতে পারি না। আমরা আমাদের কাজের প্রতি অমনোযোগী। ড্যাট ইট!!!আমাদের এই ফুল প্রুফ প্লানকে শেষ করে দিলো। আমি বুঝতে পারছিনা কি করে সম্ভব? আমি নিতে পারছিনা।
আফতাব চলে গেলো।
সবাই তখনো দাড়িয়ে আছে।
আকাশঃআমি এটা বুঝতে পারছিনা প্লানটা তো শুধু আমরা জানতাম তাহলে ডেভিল কি করে জানলো
তিতিরঃআমিও বুঝতে পারছিনা।
তিতাসঃহয়তো আমাদের মধ্যে কেউ একজন লিক করেছে।
তিতিরঃকি বলছেন এটা আমরা…???
তিতাসঃহুমমমমম।আমাদের মধ্যেই হয়েছে।
সবাই তখনো দাড়ানো অবস্থায়। কনফারেন্স রুমটা শান্ত হয়ে রয়েছে। কারো মুখে কথা নেই।সবাই একে অপরকে দেখছে।
একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
.
.
চলবে…………………………….
লিখেছেনঃ নিলাঞ্জনা রহমান