যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি
“যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি” হলো কর্নেল (অবঃ) শরিফুল হক ডালিম (মেজর ডালিম) এর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। এই বইটিতে তিনি তার জীবন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন।
পাকিস্তান: রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল
১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলেও ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি করে, যেটি যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা ও পরিণতি
ক্ষমতা হস্তান্তরের বিলম্ব এবং পাকিস্তান সরকারের অনীহা মুক্তিযুদ্ধের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা সম্পর্কিত তথ্য যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিরোধ সংগ্রাম রূপ নেয় স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
প্রতিরোধ সংগ্রাম ধীরে ধীরে স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে এ সম্পর্কিত তথ্য যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
দুঃসাহসিক পলায়ন এবং দিল্লীর অভিজ্ঞতা
শরিফুল হক ডালিম পাকিস্তান থেকে দুঃসাহসিকভাবে পালিয়ে ভারত যান এবং দিল্লীতে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, যেটি যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
বৈদ্যনাথ তলায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পিঠস্থান কোলকাতা
কলকাতায় কর্নেল ওসমানীর সাথে আলোচনা করে শরিফুল হক ডালিম মুক্তিযুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ করেন।
ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত এবং গ্রেন্ড কনফারেন্স
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল গ্রেন্ড কনফারেন্স, যা যুদ্ধের গতি পরিবর্তনে সহায়ক হয়, এ সম্পর্কিত তথ্য যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্বের বিভিন্ন ঘটনা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি বইটির এই অধ্যায়ে।
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা
মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও ইয়াহিয়া খানের সাধারণ ক্ষমা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
যুদ্ধকালীন সময়ে লুটপাট এবং দুর্নীতির ইতিহাস
মুক্তিযুদ্ধের সময় লুটপাট ও দুর্নীতি সম্পর্কিত ইতিহাস এই অধ্যায়ে বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
দ্বিতীয়বার আহত হলাম এবং স্মরণীয় বিয়ে
শরিফুল হক ডালিম মুক্তিযুদ্ধের সময় দ্বিতীয়বার আহত হন এবং তার বিয়ের স্মৃতি তুলে ধরেন।
মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব এবং ভারত সরকারের স্বীকৃতি
মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বে ভারত সরকারের স্বীকৃতির গুরুত্ব এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আচমকা বিমান হামলা, মুক্তিযুদ্ধের শেষ অধ্যায়
মুক্তিযুদ্ধের শেষ অধ্যায়ে পাকিস্তানের আচমকা বিমান হামলার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ ও আদর্শিক কারণে আওয়ামী লীগে ভাঙ্গন
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে আদর্শিক কারণে আওয়ামী লীগের বিভক্তি ও ভাঙ্গনের বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
মিত্র বাহিনীর নজীরবিহীন লুটপাট ও আওয়ামী দুঃশাসন
মুক্তিযুদ্ধের পর মিত্র বাহিনীর লুটপাট ও আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
বাকশালী স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
শরিফুল হক ডালিম বাকশালী স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস এবং বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সেনা পরিষদ এবং সেনা বাহিনীর স্বৈরশাসনের বিরোধিতা
সেনা পরিষদ ও স্বৈরশাসনের বিরোধিতা নিয়ে শরিফুল হক ডালিমের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে।
সামরিক বাহিনীকে দলীয়করণের প্রচেষ্টা
সামরিক বাহিনীকে দলীয়করণের প্রচেষ্টা নিয়ে তার অভিজ্ঞতা ও মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে।
চাকরি হারাবার পর অন্য জীবনে
চাকরি হারানোর পর শরিফুল হক ডালিমের জীবন এবং নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
একদলীয় নিষ্পেষনের জাতাকলে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা এবং সেনা পরিষদ
একদলীয় শাসনের জাতাকলে সেনা পরিষদ ও অন্যান্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।
সফল অভ্যুত্থান এবং বিপ্লবত্তোর পরিস্থিতি
সফল অভ্যুত্থান এবং এর পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে শরিফুল হক ডালিমের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করা হয়েছে।
বিভিন্নমুখী চক্রান্তের জাল
বিভিন্নমুখী চক্রান্তের জাল এবং তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
৩রা নভেম্বরের প্রতিবিপ্লবী ক্যু’দাতা এবং ৭ই নভেম্বরের সিপাহী-জনতার পাল্টা অভ্যুত্থান
১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর এবং ৭ই নভেম্বরের ঘটনাবলী নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।
শরিফুল হক (ডালিম) সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য:
শরিফুল হক (ডালিম) (জন্ম: ১৯৪৬) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন। শেখ মুজিব নিহত হবার পর মেজর ডালিম (পরবর্তিতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল) নিজেই বেতারে হত্যার সাথে জড়িত থাকার ঘোষণা দেন। ৭৫’ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সরকার তাকে বিদেশে বিভিন্ন বাংলাদেশি দূতাবাসে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান
শরিফুল হক ডালিম প্রথমে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগ দেন, পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চলে আসেন।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি পাকিস্তানে (তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান) ছিলেন। ২০ এপ্রিল, ১৯৭১ তিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ভারত আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্তি
মেজর ডালিম মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বীর উত্তম খেতাব পান।
শেখ মুজিব হত্যা
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সাথে মেজর ডালিম সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
৭৫’ পরবর্তী অবস্থান
শেখ মুজিব হত্যা মামলায় মেজর ডালিমকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে।