৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর: পঁচাত্তরের ঐতিহাসিক ঘটনা ও শারমিন আহমদের দৃষ্টিকোণ
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। এই দিনটি জাতীয় চার নেতা—তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এবং এএইচএম কামারুজ্জামান—কে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ভয়াবহ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এবং এর পেছনের ঘটনাবলী নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদের রচিত বইয়ে “৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর”।
৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে ৩ নভেম্বরের ঘটনা, এর পূর্বাপর প্রেক্ষাপট এবং জাতীয় চার নেতার জীবন ও কর্মের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। শারমিন আহমদ একজন প্রত্যক্ষদর্শীর দৃষ্টিকোণ থেকে এই ঘটনাবলীকে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি তার পিতার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং তাজউদ্দীন আহমদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনের অবদানগুলি আলোকপাত করেছেন।
বইটির মূল থিম ও বিষয়বস্তু
এই বইটি শুধুমাত্র ইতিহাসের পাতা নয়, বরং এটি একটি মানসিক যাত্রাও বটে, যেখানে তাজউদ্দীন আহমদ এবং অন্যান্য জাতীয় নেতাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনাবলী ও এই হত্যার পেছনে থাকা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিক বিবরণ বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে আছে। লেখিকা বইয়ের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ এবং তথ্যবহুল আখ্যান উপস্থাপন করেছেন, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে।
জীবনী ও পটভূমি:
তিনি, তাজউদ্দীন আহমদ ও সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের জ্যৈষ্ঠ কন্যা, ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন। সেখানে তিনি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেলোশিপসহ উইমেন্স স্টাডিজে মাস্টার অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি শিশু শিক্ষার ওপরেও একটি মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করেন।
তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত লেখিকা ও গবেষক। তার রচিত দ্বিভাষিক বই “হৃদয়ে রংধনু-দ্য রেইনবো ইন এ হার্ট” মাধ্যমিক স্তরের জন্য ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ আর্টস কারিকুলামে উচ্চ অনুমোদন পেয়েছে এবং এটি সমাজে শান্তি শিক্ষা প্রসারের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
শারমিন আহমদের “৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর” বইটি তার পিতার স্মৃতি, দেশপ্রেম এবং ঐতিহাসিক সত্যের উপর ভিত্তি করে রচিত একটি অনন্যসাধারণ গ্রন্থ। এই বইটি দেশের ইতিহাস এবং রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে, যা আজকের পাঠকদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।